বনানীতে জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড বারে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মনির হোসেনের বিরুদ্ধে। হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভিআইপি রুম না দেওয়ায় অনুসারীদের নিয়ে এসে হামলা ও ভাঙচুর চালান তিনি।
গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই হোটেলে ভাঙচুর চালানোর একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ সময় তারা নারীদের লাঞ্ছিত করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হোটেলের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক বাদী হয়ে ঢাকার বনানী থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। এতে আরও ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শাড়ি পরা এক নারী হোটেলটির সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নিচে নামছেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে এক ব্যক্তি ওই নারীর পথরোধ করে শরীরে আঘাত করছেন। তার হামলায় ওই নারী মেঝেতে পড়ে যান। ওই সময় তার পেছনে আরেক নারীও নামার চেষ্টা করছিলেন। তাকে পেছন থেকে ধাওয়া করছিলেন কয়েকজন। একজন তাকে ধরে নিচে ফেলে দেন। এরপর হামলাকারীরা মেঝেতে পড়ে যাওয়া দুই নারীকে আক্রমণ করেন, তখন তারা চিৎকার করছিলেন। ৮ থেকে ১০ জনকে হামলায় অংশ নিতে দেখা গেছে। এ সময় তাদের কেউ কেউ ভিডিওটির সীমানার বাইরে চলে যান। আবার নতুন করে কয়েকজনকে সেখানে ঢুকতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) যুবদলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায় দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে মনির হোসেনের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে মনিরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল রেস্টুরেন্টে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। তারা টিভি, চেয়ার, টেবিল, সিসিটিভি ক্যামেরা ও মনিটর, ল্যাপটপ, গ্লাস ও অন্যান্য সামগ্রী ভেঙে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করে। এ ছাড়া কাউন্টার থেকে তারা ৭০ হাজার টাকা এবং স্টোর থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিদেশি মদ লুট করে নিয়ে যায়। চলে যাওয়ার সময় পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
মামলার বাদী আবু বকর বলেন, ঘটনার আগের দিন মনির রেস্টুরেন্টে এসে নিজেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা পরিচয় দিয়ে ভিআইপি রুম দাবি করেন। সে সময় কোনো রুম খালি না থাকায়, তাকে সাধারণ টেবিলে বসানো হয়। খাবার শেষে ছাড় দিয়ে বিল নেওয়া হলেও তিনি ক্ষুব্ধ হন এবং হুমকি দিয়ে রেস্টুরেন্ট ত্যাগ করেন।
বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, জাকারিয়া হোটেলের ঘটনায় অভিযুক্তদের এরই মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হোটেল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।
মন্তব্য করুন