ফ্যাসিবাদের চিতার ওপর নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ‘ফিরে দেখা রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট প্রত্যাশা আর প্রাপ্তি’ নিয়ে শীর্ষক কথকতায় তিনি এই মন্তব্য করে। ‘ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানে বর্ষপূর্তিতে জাতীয় নেতা, সাংবাদিক ও জুলাই যোদ্ধাদের অংশগ্রহণে কথকতার আয়োজন করে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টি।’
বাছির জামাল বলেন, জুলাই বিপ্লব ৩৬ দিনে হয়নি। ১৫ বছরের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। যার সূচনা হয় সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হয়েছে। এই ফ্যাসিবাদের চিতার ওপর নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পরে যখন দ্বাদশ নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে তখন খুব হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকজন রাজনীতিবীদ বলেছিল হতাশার কিছু নাই। একটা স্ফুলিঙ্গ হবেই। কিন্তু কখন হবে তা এখনই বলা যাবে না। তবে দ্বাদশ নির্বাচনের পর সেটাই হয়েছে। ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত হয়েছে।
গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের নির্যাতনে আমাদের ৬৭ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। সবশেষ জুলাই আন্দোলনে ৬ জন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছে।
কথকতা অনুষ্ঠানে একাত্তর টিভির সিইও শফিক আহমেদ বলেন, যে কোনো আন্দোলনে চিত্রগ্রাহকদের ভূমিক অনেক। ২০০৮ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে পরবর্তী সব নির্বাচনগুলোতে তারা ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে।
আন্দোলন ৩৬ দিনে হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজের পরিনতি নিজেই তৈরি করেছে। এখন হাইব্রিড আন্দোলনকারীদের দেখা মিলছে, ৩৬ দিন নয় আন্দোলনটি সাড়ে ১৭ বছরের।
বিগত দিনে সরকারের সমালোচনা করা যায়নি, এখনও বাধা আছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে এগিয়ে যেতে চাই, গণমাধ্যম কারও শত্রু নয়, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ আন্তরিকতা থাকবে পরবর্তী সরকারের সেটিই প্রত্যাশা।
বাংলাভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সেকান্দার রেমান বলেন, বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে অনেক আমদানি করা সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী এসেছে। তারা নতুন নতুন বয়ান দিচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা যেভাবে ভোটের অধিকারের কথা বলছে তার আগে মানুষের মৌলিক অধিকার ভাতের অধিকারের কথা বলছে কিনা?
কথকতা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক আমিরুল মোমেমিন মানিক বলেন, কেবল ৩৬ দিনে এই বিপ্লব হয়নি। ২০০৮ সাল থেকে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ২৪এ জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। ২০২৩ সালে ২৮ অক্টোবর সমাবেশের সারা বাংলাদেশের মানুষ বিপ্লবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু অনেকে বিপ্লবের নায়ক হতে চাই। কিন্তু আমি বলবো বিপ্লবের মূল নায়ক আন্দোলনে শহীদ হয়েছে।
কথকতায় সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন