নোবেলজয়ী কবি, দার্শনিক এবং ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রসংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের ডিরেক্টর অ্যান ম্যারি জর্জ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকের সন্ধ্যার এই সমাবেশ একজন দূরদর্শী মনীষার জীবনের ও সৃষ্টির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন শুধু সাহিত্যিক নন, ছিলেন এক মহান চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও সংস্কারক। তার আত্মা ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে চিরজাগরূক।’
তিনি রবীন্দ্রনাথের ঐক্যের প্রতীকস্বরূপ অবদানের কথাও তুলে ধরেন এবং বলেন “বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ এবং ভারতের ‘জন গণ মন’—উভয়ই তার সৃষ্টি—যা আমাদের অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অমলিন প্রতীক।”
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও ICCR বৃত্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘ভারত সরকার প্রতি বছর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০টিরও বেশি ICCR বৃত্তি প্রদান করে, যাতে তারা বিশ্বভারতীসহ ভারতের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। মিস দেবলীনা সুরের মতো অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী আজও তাদের সৃষ্টিশীল কর্মের মাধ্যমে গুরুদেবের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন।’
এ সময় রবীন্দ্রনাথের চিরন্তন আবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি, প্রেম, আত্মপরিচয় এবং মানব মর্যাদা নিয়ে তার ভাবনা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।’ তিনি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের স্মরণীয় উক্তি দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন: ‘১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট, কলকাতা শহরে একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। তার দেহাবশেষ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও তিনি রেখে গেছেন এক উত্তরাধিকার—শব্দ, সুর, কবিতা, ভাবনা ও আদর্শের—যা কোনো আগুন নষ্ট করতে পারে না।’
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন দুই বিশিষ্ট শিল্পী—তানজিনা তোমা ও দেবলীনা সুর।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশনের সদস্যরা, ‘ভারত বিচিত্রা’-এর লেখকরা, বিশিষ্ট শিল্পী, সংস্কৃতিপ্রেমী এবং ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত রবীন্দ্রসংগীতপ্রেমীরা।
মন্তব্য করুন