

চট্টগ্রাম ওয়াসায় দৈনিক মজুরি ও আউটসোর্সিং ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা ওয়াসা ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ম্যাজিস্ট্রেটের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাদের স্থায়ী নিয়োগ-সংক্রান্ত মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী না করে নতুন করে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করার পরও বিদ্যমান কর্মীদের উপেক্ষা করে নতুন জনবল নিয়োগের উদ্যোগকে তারা ‘পরিকল্পিত বঞ্চনা’ বলে দাবি করেন। তারা বিজ্ঞপ্তি স্থগিত ও দ্রুত স্থায়ী নিয়োগের দাবি জানান।
কর্মচারীদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম ওয়াসার সংকটকালীন সময়ে ওয়াসার কাজ সচল রাখতে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে প্রথমে তাদের বৈধতা নিশ্চিত করাই যুক্তিসংগত ছিল। মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষার শামিল বলে মন্তব্য করেন তারা। এ ছাড়া বোর্ড সভায় স্থায়ী করার সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়িত হয়নি বলেও অভিযোগ করেন।
আন্দোলনকারীদের একজন মো. বোরহান উদ্দিন নিজেকে বাংলাদেশ দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক দাবি করে কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসায় দৈনিক মজুরি ও আউটসোর্সিংয়ে প্রায় ২৭০ জন কর্মচারী কাজ করেন। তাদের স্থায়ী না করে সেই একই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমরা ২০৮ জন আজকের আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। স্থায়ী নিয়োগ ছাড়া আমরা পিছপা হব না।
তিনি আরও বলেন, ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার এসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা উনার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করেছি। রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত না হলে পানি সরবরাহ বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাব।
চট্টগ্রাম ওয়াসা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক-কর্মচারী দলের কার্যকরী সভাপতি কামাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা শ্রমিকদের উপেক্ষা করে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বিদ্যমান কর্মীদের অন্তত নিয়োগপত্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু সেটি মানা হয়নি।’
চট্টগ্রাম ওয়াসার ম্যাজিস্ট্রেট শিরীন আক্তার কালবেলাকে বলেন, দাবির বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে জানা নেই। ওয়াসার আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব যেহেতু আমার, তাই আমি তাদের বলেছি দু-তিনজন প্রতিনিধি এসে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। তবে দাবির বিষয়টি ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দেখবে।
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ারা বেগমকে একাধিক কল দিলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।
মন্তব্য করুন