চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারণা

চায়ের কাপে নির্বাচনী ঝড় ‘সেয়ানে সেয়ানে’ লড়াই 

জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ছবি : কালবেলা
জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ছবি : কালবেলা

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র হাতে গোনা দুই সপ্তাহ। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আটঘাট বেঁধে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন প্রত্যেক প্রার্থী। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা। নগরের পাশাপাশি গ্রামগঞ্জের হাটবাজারে চায়ের কাপেও উঠেছে ঝড়। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্রসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের চলছে জমজমাট প্রচারণা। কেউ উঠান বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, আবার কেউ করছেন গণসংযোগ, কেউ আবার নির্বাচনী সভা করে ভোট চাচ্ছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা-উপজেলায়। প্রতিটি আসনেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের কঠিন প্রতিদ্বদ্বী হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যারা ক্ষমতাসীন দলটিরই নেতা। ফলে প্রত্যেকেরই ব্যাপক পরিমাণে কর্মী-সমর্থক থাকায় নিবার্চনের সমীকরণ বলছে, লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, আন্দরকিল্লা, চকবাজার, আগ্রাবাদ কর্ণফুলী ব্রিজ, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, এ কে খানসহ বেশির ভাগ এলাকা ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টারে। পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পোস্টার। শুধু অফলাইনেই নয়, অনলাইনেও জোরেশোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

এ কে খান এলাকার ফল ব্যবসায়ী আমজাত মিয়া। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘এবার ভালো ভোট হবে। কারণ নির্বাচন কমিশনের আইনকানুন এবার বেশ কড়া। প্রত্যেক প্রার্থীই হেবিওয়েট। অর্থাৎ লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে।’

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) : চট্টগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহবুব রহমান রুহেলের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন মা আয়েশা মোশাররফ ও ভাবি তাহমিনা রহমান। নির্বাচনী এলাকা মিরসরাইয়ে দিনভর ঘুরে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে তারা নৌকা প্রতীকের জন্য ভোট চেয়েছেন। রুহেলের গণসংযোগে নেমে আয়েশা মোশাররফ বলেন, ‘আমার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এ আসন থেকে সাতবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। আগে স্বামীর জন্য ভোট চেয়েছি। এই প্রথম ছেলের জন্য ভোট চাইতে আপনাদের দুয়ারে এসেছি। আমার ছেলে এমপি নির্বাচিত হলে বাবার মতোই আপনাদের পাশে থাকবে। আপনাদের জন্য কাজ করে যাবে।’

মাহাবুবুর রহমান রুহেলের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন। ঈগল হাতে তিনি চষে বেড়িয়েছেন বাড়ি থেকে বাড়ি। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) : আওয়ামী লীগের প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সকাল-সন্ধ্যা বিরামহীনভাবে গণসংযোগ চালাচ্ছেন তিনি। উদ্বোধন করছেন নির্বাচনী অফিস, করছেন পথসভাও। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছেন, উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে নৌকায় ভোট দিন। অন্যদিকে তার তার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তরমুজ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়ব। নৌকার সনিকে ঠেকাতে নানা কৌশল অবলম্বন করে গণসংযোগ, প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে তাকে।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) : এই আসনের নৌকার প্রার্থী মাহাফুজুর রহমান মিতা। তিনি নানা উন্নয়নের কথা বলে পাড়া মহল্লায় চালাচ্ছেন প্রচারণা।

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) : এই আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম আল মামুন। তার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণায় অংশ নেন তার দুই ছেলে সাদমান ও সারমান। তারা বলেন, স্মার্ট সীতাকুণ্ড বিনির্মাণে আমাদের বাবাকে ভোট দিন।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) : এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি লড়ছেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে। বিভিন্ন এলাকায় তিনি প্রচারণায় অংশ নেন। বলেন, সর্বোচ্চ দিয়ে মানবসেবা করে যাব। অন্যদিকে ওই আসনের কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলছেন, নির্বাচনে জিতলে উন্নয়ন করবেন এলাকার। নতুন করে তৈরি করবেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) : আসনটিতে আবারও আওয়ামী লীগের টিকেট পাওয়া এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে ধরছেন। তার হয়ে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরীও। তিনি বলছেন, উন্নয়ন চাইলে আমার বাবাকে আবারও চেয়ারে বসতে হবে। তাহলেই বদলে যাবে রাউজান।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সরকারের নানা উন্নয়নের তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরছেন। বলছেন, নৌকায় ভোট দিলে জনগণের স্বপ্ন ও প্রত্যাশার প্রাপ্তি ঘটে।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়াখালী-চান্দগাঁও) : বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ঘুরে ঘুরে নিজের প্রতিশ্রুতির কথা জানান কেটলি প্রতীকের প্রার্থী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। তিনি বলেন, আমি কাজ পাগল মানুষ, মানুষের কল্যাণে কাজ করাই আমার ব্রত। অন্যদিকে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা সোলাইমান আলম শেঠ প্রচারণা চালান বিভিন্ন এলাকায়। বলেন, আমিন জুটমিল ও টেক্সটাইল পুনরায় চালু করার চেষ্টা করব। উন্নয়ন করব এলাকা, কর্মসংস্থান হবে সবার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেশবপুরে বিএনপি নেতা আবু হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি

ঢাকায় গাইবেন আতিফ আসলাম, আয় যাবে জুলাই শহীদদের পরিবারে

ঢাকা-৭ আসনে ৩১ দফার প্রচারণা মীর নেওয়াজের

গভীর রাতে সাংবাদিক সোহেলকে তুলে নিয়ে গেছে ডিবি

বাংলাদেশের কাছে হারের পর যা বললেন ভারতের কোচ

ভারতের বিপক্ষে জয় ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তের একটি : হামজা চৌধুরী

হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লিকে চিঠি দিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রাজধানীতে রাতে গাড়িতে আগুন

পিপি কার্যালয়ের সামনে পটকা ফুটিয়ে ভীতির চেষ্টা

গভীর রাতে রাজধানীতে মার্কেটে আগুন

১০

বাংলাদেশ দলকে জামায়াত আমিরের অভিনন্দন

১১

টানা ২ দফায় স্বর্ণের দাম কত কমলো দাম?

১২

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ে বন্ধ হচ্ছে ৫ সেবা

১৩

পারিবারিক নির্যাতনের শিকার ঝালকাঠির শিশু রাইসার পাশে তারেক রহমান

১৪

ভারতকে হারিয়ে হামজাদের জন্য ২ কোটি টাকার তাৎক্ষণিক বোনাস

১৫

২২ বছর পর বাংলাদেশের ভারত বধে তারেক রহমানের অভিনন্দন

১৬

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আ.লীগ নেতার মৃত্যু

১৭

তারেকের দল নিয়ে যে তথ্য দিল ইসি

১৮

জনগণের ভালোবাসাই আমার শক্তি : ফারুক

১৯

কালবেলা-এসএমসি ডায়াপার গোলটেবিল বৈঠক / সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব শিশুর নিউমোনিয়া প্রতিরোধ

২০
X