সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৫ এএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

জীবিত সন্তানকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রি করলেন বাবা

নিজের জমির কাগজপত্র দেখাচ্ছেন ভুক্তভোগী সুবন বেপারী ওরফে নাহিদ হাসান। ছবি : কালবেলা
নিজের জমির কাগজপত্র দেখাচ্ছেন ভুক্তভোগী সুবন বেপারী ওরফে নাহিদ হাসান। ছবি : কালবেলা

জীবিত সন্তানকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সিরাজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের ধারে ধারে ঘুরছেন সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ভুক্তভোগী সুবন বেপারী ওরফে নাহিদ হাসান।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক কন্যাসন্তান রেখে প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন উপজেলার চান্দহুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের সিরাজ উদ্দিন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা বেগমের ঘরে জন্ম নেন সুবন বেপারীসহ দুই ছেলে। সে সময় সিরাজ উদ্দিন শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন।

১৯৯৯ সালে শ্বশুরের আর্থিক সহযোগিতায় চান্দহর ইউনিয়নের চর কালিগঙ্গা মৌজায় ৫৪ শতাংশ কৃষি জমি কেনেন সিরাজ উদ্দিন। সেই জমি অর্ধেক সিরাজ ও বাকি অর্ধেক ছেলে সুবন বেপারীর নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। তখন সুবনের বয়স ছিল ৫ বছর। শ্বশুরবাড়ি থেকেই বিদেশে যান সিরাজ উদ্দিন। তারপর থেকে পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে সিরাজের।

পরে সন্তান সুবন ওরফে নাহিদ হাসানকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওয়ারিশ সনদ নেন সুবনের বাবা সিরাজ উদ্দিন। এরপর সুবনের ২৭ শতাংশসহ পুরো ৫৪ শতাংশ জমিই বিক্রি করে দেন সিরাজ উদ্দিন। ওয়ারিশ সনদে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদলের স্বাক্ষর রয়েছে। সুবনের মা নাজমা বেগম বলেন, সিরাজ উদ্দিনের প্রথম স্ত্রীর একটি মাত্র কন্যাসন্তান রয়েছে। এখন দাবি করা হচ্ছে সেই ঘরে একটি ছেলে ছিল, যার নাম সুবন। ছোট বেলাতেই সে মারা গেছে। এ কারণে তার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বাবা। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। সুবন তার দ্বিতীয় স্ত্রী অর্থাৎ আমার ছেলের নাম।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলম জানান, এর আগেও কয়েক দফা জমি বিক্রির পাঁয়তারা করেন সিরাজ উদ্দিন। কিন্তু সে সময় সফল হননি। চান্দহর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের সহযোগিতায় জীবিত সন্তানকে মৃত দেখিয়ে এ জালিয়াতি করা হয়েছে। মেম্বারের কথায় চেয়ারম্যান কীভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়া একটা জীবিত মানুষকে মৃত দেখাল।

সিরাজ উদ্দীন সৌদি আরবে অবস্থান করায় যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

চান্দহুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত হোসেন বাদল বলেন, কেউ যদি তথ্য গোপন করে ওয়ারিশ সনদ নেয় এটা তার ব্যাপার। আমি সবসময় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের দিয়ে তদন্ত করিয়ে তারপর সার্টিফিকেট দেই। তারপরও যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে সংশোধনের সুযোগ আছে।

সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পলাশ কুমার বসু কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে করে প্রত্যেক ব্যক্তি ন্যায়বিচার পায়। ইউনিয়ন পরিষদ যদি জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে সনদ দেয় তাহলে অবশ্যই এটা অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কে আগে ঝগড়া শুরু করেন? যা বলছে গবেষণা

গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে

স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

অর্থপাচার মামলা / মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিমের জামিন নামঞ্জুর 

রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকবে ১০ সদস্যের কমিটি

উচ্চ আদালতকেও সংস্কার করতে হবে : আসিফ নজরুল

যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ড সভা বানচাল চেষ্টার অভিযোগ

এক ও দুই টাকার কয়েন নিয়ে নতুন নির্দেশনা

নির্বাচন কমিশনের ‘দায়িত্বহীনতার’ জবাব দেওয়া উচিত : ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

রিপনের মা-বাবাকে নিয়ে যা বললেন অভিনেত্রী চমক

১০

বিএনপিতে যোগ দিলেন জামায়াতের ৩০ নেতাকর্মী

১১

মানুষের জীবনমান উন্নয়নের সব কিছুই ৩১ দফায় রয়েছে : কফিল উদ্দিন

১২

খুব দ্রুতই পাস হচ্ছে জকসু আইন 

১৩

দেশে দক্ষমানব সম্পদ উন্নয়নে তাকামোল প্রকল্পের সফলতা

১৪

স্থায়ী কমিটিতে যেসব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল বিএনপি

১৫

ভেজাল কয়েকশ বস্তা টিএসপি সার ধ্বংস

১৬

ঢাকা-১৩ আসনে বিএনপি সমর্থিত জোটের প্রার্থী ববি হাজ্জাজ

১৭

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল আরও দুই দেশ

১৮

আমি আয়নাঘরে ছিলাম : আমির হামজা

১৯

বিশ্ব সোরিয়াসিস দিবসে সোরিয়াসিস এওয়ারনেস ক্লাবরে সেমিনার

২০
X