বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ছেলের কবরের পাশে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন বাবা-মা 

গুলিতে নিহত ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন বাবা-মা। ছবি : কালবেলা
গুলিতে নিহত ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন বাবা-মা। ছবি : কালবেলা

‘আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি মিলে চাকরি করত। সকালে নাশতার জন্য আমার থেকে ৫০ টাকা নিয়ে বাজারে যায় সে। এরপর লাশ হয়ে বাড়ি ফেরে। এখন পরিবারের হাল কে ধরবে?’ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বিপ্লব হাসানের মা বিলকিস বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন।

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডৌহাখলা ইউনিয়নের চূড়ালি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে বিপ্লব হাসান (১৯)। দুই বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে বিপ্লব সবার বড়। সে স্থানীয় মোজাফফর আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। দুই বোনের মধ্যে একজন অষ্টম ও আরেকজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।

গত ২০ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে সংঘর্ষে বিপ্লব গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওইদিনই হাসপাতাল থেকে বিপ্লবের মরদেহ বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিপ্লবের বাবা বাবুল মিয়া একটি ওয়ার্কশপ চালাতেন। কয়েক বছর আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনার খরচ জোগানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সংসারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি স্থানীয় কৃষাণী মিলে চাকরি নেন বিপ্লব।

গত ২০ জুলাই দুপুরের শিফটে বিপ্লবের ডিউটি ছিল। ওইদিন সকালে নাশতা করার জন্য মায়ের কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে বাড়ির সামনে কলতাপাড়া বাজারে যান তিনি। কিছুক্ষণ পর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে বিপ্লবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনেই ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন তার বাবা-মা। স্বজনরা জানান, বিপ্লবদের সম্বল বলতে দুই শতাংশ জমি ঘর-ভিটেটাই। অভাবের সংসারে ছেলেটা চাকরি করে কিছু হাসি ফুটিয়েছিল। এখন তো তাদের সব শেষ হয়ে গেল।

বিপ্লবের মা বিলকিস বেগম বলেন, সংঘাতের খবর পেয়ে সড়কে গিয়ে দেখি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের কাছে ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। বাজারের দোকানের পেছন দিয়ে ছেলের কাছে যেতে যেতে ও চোখের আড়াল হয়ে যায়। একটু পরেই দেখি গাড়ি দিয়ে গুলিবিদ্ধ বিপ্লবকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বিপ্লবের বাবা বলেন, ঘটনার দিন সিলেট ছিলাম। আগের রাতে বিপ্লব ফোন করে বলে বাবা দেশের পরিস্থতি ভালো না, তুমি নিরাপদে থেক। আমাকে নিরাপদে থাকার কথা বলে বিপ্লব পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিল। বিপ্লবের মরদেহের মাথা, ঘাড় ও পেটে গুলির ছিদ্র ছিল। আমি এ ঘটনায় মামলা করব না, মামলা করলেই কি আর ছেলে ফিরে আসবে?

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চবিতে মুখোমুখি অবস্থানে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির

চাকসুর ফল কারচুপির চেষ্টার অভিযোগে শাহবাগে ছাত্রদলের অবস্থান

৩১ দফা বাস্তবায়নে / বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী সোহাগের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

চবিতে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

সেনা হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের বিচার নিয়ে ভলকার তুর্কের আহ্বান

বিএনপিকে ধন্যবাদ জানাল জামায়াত

চাকসু নির্বাচনে আরেক হলের ফল ঘোষণা, ভিপি পদে এগিয়ে ছাত্রদল

গোমতীর চরে আগাম সবজির চাষ, অধিক লাভের আশা কৃষকের

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে কেশবপুরের তপস্যা

গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

১০

ইন্দোনেশিয়ায় তেলবাহী ট্যাঙ্কারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ১০

১১

রাত থেকে লাইনে নারী-পুরুষ, সকালে মেলে আটা

১২

ওসিকে অপসারণে শিক্ষার্থীদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

১৩

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

১৪

উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপালী উৎসব কাউনিয়া আদি শ্মশানে

১৫

বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবস ২০২৫ : মেরুদণ্ডের যত্নে সচেতন হই, সুস্থ জীবন গড়ি

১৬

কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের বেইলি ব্রিজে ফাটল, দুর্ঘটনার শঙ্কা

১৭

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দলের একক মাতবরি থাকবে না : নুর

১৮

জুলাই জাতীয় সনদে সই করবে না ৪ দল

১৯

সিলেটে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভাগ্য নির্ধারণ রোববার

২০
X