টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না গুলিবিদ্ধ তালহার

টাঙ্গাইলে মায়ের সঙ্গে নিজ বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ খন্দকার তালহা। ছবি : কালবেলা
টাঙ্গাইলে মায়ের সঙ্গে নিজ বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ খন্দকার তালহা। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না টাঙ্গাইলের খন্দকার তালহা। বিনা চিকিৎসায় গুলিবিদ্ধ পা স্বাভাবিক না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একমাত্র ছেলের অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা কোহিনুর বেগম। বাম পায়ে গুলির সিসা নিয়েই বিছানায় কাতরানো তালহার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

জানা যায়, তালহা টাঙ্গাইল পৌরসভার বেড়াবুচনা সবুজবাগ এলাকায় খন্দকার আশরাফ আলীর ছেলে ও শহরের দারুল উলুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। গত ৫ আগস্ট টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। একপর্যায়ে শহরের কলেজপাড়া এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তালহা ভয়ে একটি ৪ তলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নেন। পিছু নিয়ে পুলিশ সেখানে গেলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে সহপাঠীদের সহায়তায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় হাসমত বলেন, তালহার মা কয়েকটি বাড়িতে ঝিঁয়ের কাজ করে। স্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্ক না থাকায় দুটি সন্তান নিয়েই তার সব স্বপ্ন। এখন ছেলের যে গতি হলো তাতে তার দুভোর্গ আরও বেড়ে গেল।

তালহার বোন সুমাইয়া আফরোজ বলেন, ভাইবোন মিলে আন্দোলনের অংশগ্রহণ করি। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। আমার ভাই যে গুলিবিদ্ধ হয়েছে সেটি জানতাম না। বাড়িতে আসার পর সহপাঠীরারা আমাকে জানায়।

গুলিবিদ্ধ তালহা বলেন, আমার বুকে পুলিশ বন্দুক ঠেকিয়ে বলে গুলি করে দেব। তখন কোনো উপায় না পেয়ে বন্দুকটি বুকে থেকে সরানোর জন্য ধস্তাধস্তি করি। একপর্যায়ে বাম পায়ে গুলি লাগে।

তালহার মা কোহিনুর বেগম বলেন, আমি এক হতভাগা নারী। আমার দুটি সন্তান নিয়ে সংসার। আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। বাপের ভিটে বাড়িতে থাকি। ছেলে আন্দোলনে গিয়ে আহত হয়েছে। ৬ দিন হাসপাতালে থাকলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা শেষ না করে বাড়ি চলে আসি।

তিনি বলেন, কোনো বৃত্তবান ব্যক্তি অথবা সরকারের কাছে আমার ছেলেকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানাই। আমি ঝিঁয়ের কাজ করে মাসে ৩ হাজার টাকা পাই। কীভাবে আমার সন্তানকে চিকিৎসা করাব। ধার দেনা করে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা শেষ করেছি। আমার হাতে আর কোনো টাকা-পয়সা নেই। এখনো তার পায়ের অপারেশন বাকি রয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর মেহেদী হাসান আলীম বলেন, তালহার বাবার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় তার মা সংসারের সব দায়দায়িত্ব পালন করেন। আমরা খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। আশপাশের মানুষ ২০০-৪০০ টাকা দেয় সেটি দিয়ে ব্যথার ওষুধ কিনতেই ফুরিয়ে যায়। তার পায়ের চিকিৎসায় প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাগবে বলে জেনেছি। এই টাকা তার পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমাদের দাবি না মানলে নির্বাচন হবে না : জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি

যারা নির্বাচন হতে দেবেন না তারা আবেগে এগুলো বলছেন : আলাল 

বিচারককে ‘ঘুষ’, বারে আইনজীবীর সদস্যপদ স্থগিত

ট্রাক প্রতীক নিয়ে নিজ এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আবু হানিফ 

শিক্ষককে ছুরি মারা সেই ছাত্রী এখন শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে

নথি সরিয়ে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি, কর্মকর্তা বরখাস্ত

নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রাসঙ্গিকতা

আগামী সরকারে থাকবেন কিনা জানালেন ড. ইউনূস

বাঁশের পাতার নিচে মিলল ৩৭ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর

একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে : মির্জা ফখরুল

১০

‘সবার উপরে ভাত’ নাটকের কোটি ভিউজ উদযাপন

১১

‘এক পায়ে পাড়া দিয়ে, আরেক পা টেনে ছিঁড়ে ফেলবো’

১২

সিলেটে পাথর লুটে জড়িত ৪২ জনের নাম প্রকাশ

১৩

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের তৃতীয় হার

১৪

নির্বাচনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চাইলেন তারেক রহমান

১৫

পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে কত বছর লাগবে, জানালেন প্রেস সচিব

১৬

স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়লেন বিসিএস ক্যাডারের ৬ কর্মকর্তা

১৭

চাকরি দিচ্ছে এসিআই, আবেদন করুন এখনই

১৮

কালুখালী জংশনে থামবে বেনাপোল এক্সপ্রেস, স্থানীয়রা উচ্ছ্বসিত 

১৯

হচ্ছে না ‘রাউডি রাঠোর ২’

২০
X