আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘চোখ হারিয়েও দুঃখ নেই, দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরে গর্বিত’

গুলি লেগে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এক চোখ নিয়েই পড়াশোনার করছেন সামী। ছবি : কালবেলা
গুলি লেগে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এক চোখ নিয়েই পড়াশোনার করছেন সামী। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় কলেজছাত্র মোস্তাহিদ হোসেন সামী। তার চোখ, মুখসহ সারা শরীরে অন্তত ১৭টি ছোররা গুলি (স্প্লিন্টার) লাগে। দুটি স্প্লিন্টার বাম চোখে ঢুকে যায়। কয়েকদফা অপারেশনের পরও একটি ছোররা গুলি চোখ থেকে বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে বাম চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পান না তিনি।

মোস্তাহিদ হোসেন সামী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুর এলাকার আক্তার হোসেন ভূইয়ার ছেলে। সে উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

এক মাস ধরে চোখের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সামী। সারা জীবনের জন্য একটি চোখ হারানোর দুশ্চিন্তায় ভুগছে সামীসহ তার পরিবার। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত স্বজনরা।

রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ফোনে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন আহত সামীর। তিনি বলেন, টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুরে মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেই। ১৮ জুলাই রাজউক স্কুলের সামনে আন্দোলন করার সময় পুলিশ এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করে।

সামী বলেন, এ সময় বাম চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির স্প্লিন্টার লেগে যায়। আমাকে উদ্ধার করে আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে কারফিউ শিথিল হলে হাসপাতালে গিয়ে শরীরের স্প্লিন্টার বের করা হয়। কিন্তু গুলির কিছু অংশ চোখে রয়ে গেছে।

এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, এটি বের করতে না পারলে আজীবন এক চোখ অন্ধত্ব নিয়ে চলতে হবে। চিকিৎসকরা তাকে দেশের বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ। ইতোমধ্যে তার চিকিৎসায় বহু টাকা খরচ হয়েছে। তার চিকিৎসা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত স্বজনরা।

সামী বলেন, দেশের জন্য কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পেরেছি। এজন্য গর্ববোধ করছি। এক চোখে দেখতে কষ্ট হয় জানিয়ে সে বলেন, আমার একটি চোখ গেলেও আরেকটি চোখ তো ভালো আছে। অনেকে তো দুটি চোখ হারিয়েছে।

সামীর বাবা আক্তার হোসেন ভূইয়া বলেন, সামীর চোখে দুবার অপাররেশন করা হয়েছে। প্রথমে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এবং পরে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে। গুলির একটি অংশ এখনও চোখে রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এটি বের করা সম্ভব না। দেশের বাইরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এজন্য ২০/২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। নতুবা এই চোখে আর কোনো দিন দেখতে পারবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যৌথবাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়া চক্রের ২ সদস্য আটক

জেলেরা হেলমেট পরে মাছ ধরেন যেখানে

বিমানবাহিনীর আন্তঃঘাঁটি স্কোয়াশ প্রতিযোগিতা সমাপ্ত

স্পেনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

কারাগারে সন্তান জন্ম দিলেন হত্যা মামলার আসামি

সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন ৬ সেপ্টেম্বর

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

ডাকসু নির্বাচন / ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার দায়ে বাদ জুলিয়াস সিজার

ধর্ষণসহ হত্যায় ফুফাতো ভাইয়ের যাবজ্জীবন

১০

কাজী নজরুলের কবিতা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস যুগিয়েছে : তারেক রহমান

১১

‘রোহিতকে সরানোর জন্যই ব্রঙ্কো টেস্ট এনেছে বিসিসিআই’

১২

অভিনেত্রী হিমুর আত্মহত্যা, প্রেমিক রাফির বিচার শুরু

১৩

ভারতে প্রয়াত ক্রিকেটারদের স্ত্রীরা পাবে অনুদান

১৪

রাজধানীতে একক ব্যবস্থায় বাস চলবে : প্রেস উইং

১৫

ভিনিকে বিক্রি করে দিতে বললেন রিয়াল কিংবদন্তি

১৬

নতুন বিচারপতিদের মধ্যে সংখ্যালঘু নেই, ঐক্য পরিষদের ক্ষোভ

১৭

বিসিবির হাতে বিপিএলের স্পট ফিক্সিং তদন্ত প্রতিবেদন

১৮

ফেসবুকের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন মাওলানা মামুনুল হক

১৯

চুল পড়া রোধ করবে যে জিনিস

২০
X