চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথে ট্রেন চলাচল চার দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (২৭ আগস্ট) রাত থেকে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এ রুটের ৭টি ট্রেন আপাতত বন্ধ রয়েছে। বন্ধ ট্রেনগুলো হলো- সুবর্ণ এক্সপ্রেস, উদয়ন, চট্টলা, মহানগর, মেঘনা, কক্সবাজার ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এসব ট্রেন এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। বন্যার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ট্রেনগুলো চট্টগ্রাম পৌঁছতে পারেনি। তাই আপাতত ট্রেনগুলো চালু করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (২৮ আগস্ট) থেকে এসব ট্রেন চালুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত একটি কন্ট্রোল অর্ডার আসতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সোমবার রাত থেকে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আপাতত এক লেনে ট্রেন চলছে। আরেকটি লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি সংস্কারের কাজ চলছে। সুবর্ণ ট্রেনটিসহ কয়েকটি ট্রেন ঢাকায় অবস্থান করছে। যদি এগুলো চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয় তাহলে আগামীকাল বুধবার থেকে এসব ট্রেন চলবে বলে আশা করছি।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের চারটি ট্রেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে। আরও চারটি ট্রেন এ স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী ছেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ জানায়, বন্যায় ফেনী থেকে ফাজিলপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রেলপথের সম্পূর্ণ রেলপথ ওয়াশআউট হয়ে যায়। এই পথে বন্যার পানির তোড়ে রেলপাত ও স্লিপার ছাড়া মাটি, পাথর রেললাইন থেকে সরে যায়। পাথরের নিচে মাটি ও বালি নরম হওয়ায় রেলপথটি মেরামত করতে অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের পুরোটা ডাবল লাইন হলেও বন্যার কারণে চট্টগ্রাম-ঢাকার আপলাইনটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে একটিমাত্র লাইন অর্থাৎ ঢাকা-চট্টগ্রাম ডাউন লাইনের মাধ্যমে ট্রেনের গতিসীমা কমিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে। আগে এ পথ দিয়ে ৬৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ কিলোমিটার গতিবেগে মিটারগেজ ট্রেন চলাচল করত। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উভয় পথের মাটি, পাথর ও ট্র্যাকের সংস্কার শেষে পর্যায়ক্রমে পুরোনো গতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।
এর আগে গত ২১ আগস্ট থেকে কুমিল্লা ও ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়। এতে ফেনীতে রেললাইন ডুবে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গত ২২ আগস্ট দুপুরের পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা কালবেলাকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন করা হয়েছে। এখন ক্ষতির প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে। বন্যায় দুটি রেললাইন থেকে পাথর সরে গেছে। এরই মধ্যে কিছু কিছু অংশে সংস্কার কাজ শুরু করেছে প্রকৌশল বিভাগ। পুরোদমে ট্রেন চালাতে কিছুদিন সময় লাগবে। তবে যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে কম গতিতে ট্রেন চলাচল করবে।
মন্তব্য করুন