আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বন্যায় ভেসে গেছে মাছ, ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় মৎস্যচাষিরা

আখাউড়া উপজেলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর দেখাচ্ছেন সোহাগ মিয়া। ছবি : কালবেলা
আখাউড়া উপজেলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর দেখাচ্ছেন সোহাগ মিয়া। ছবি : কালবেলা

আমার সাতটি পুকুরের সব মাছ পানিতে ভেসে গেছে। একটি মাছও রাখতে পারিনি। আমি শেষ হয়ে গেছি। ঋণ করে মাছ চাষ করেছিলাম। এখন কি করে ঋণ পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না। এ কথা বলছিলেন আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেব নগরের মৎস্য খামারি সোহাগ মিয়া।

রহিমপুর গ্রামের ইবরাহিম মিয়া বলেন, আমাদের ৩৩টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। কিছুই আটকাতে পারিনি। কীভাবে এ ক্ষতি পোষাব বুঝতে পারছি না। সোহাগ মিয়া ও ইবরাহিম মিয়ার মতো অসংখ্য মৎস্যচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ বন্যায়। বানের জল ভাসিয়ে নিয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে তাদের। এ ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত কাটছে না তাদের।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে আখাউড়া উপজেলায় বন্যা দেখা দেয়। ভেসে যায় পুকুর, জলাশয়ের মাছ। মাত্র তিন দিনের বন্যার পানি ক্ষতি করেছে বহু মানুষের। নষ্ট হয়েছে বহু সম্পদ। বন্যার পানিতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৪ শতাধিক পুকুর তলিয়ে যায়। ভেসে যায় পুকুরের মাছ। আকস্মিক বন্যায় ১২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ধারণা করছে মৎস্য অফিস।

কথা হয় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের সোহাগ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার ৭টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ১০-১৫ দিনের মধ্যে মাছগুলো বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু গত ২০ আগস্ট ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে আমার সব কিছু শেষ হয়ে যায়। আমার প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। সব কিছু হারিয়ে এখন আমি দিশাহারা। আমি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেছি। এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না। সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মোবারক চৌধুরী বলেন, আমার ২২০ শতকের ৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। আমার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি ঋণ করে টাকা এনেছিলাম। এখন ঋণ শোধ করব কিভাবে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৪ শতাধিক পুকুর/দিঘি/খামার রয়েছে। এসব পুকুর/দিঘি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। পুকুর/দিঘির মাছ ভেসে যায়।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান বলেন, বন্যায় আখাউড়ায় ১২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিদের তালিকা করে মৎস্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের বিনামূল্যে মাছের পোনা ও মাছের খাদ্য প্রদান করা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রস্তাব মঞ্জুর হলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে দেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আলোচিত ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলার আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার

কানাডায় নেওয়ার কথা বলে নিল ৩৮ লাখ, নিঃস্ব ২ পরিবার

মার্করামের বিশ্বরেকর্ড, প্রোটিয়াদের কাছে ধবলধোলাই ভারত

আমার মতো এত বেশি উত্থান-পতন কেউ দেখেনি: জোভান

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ 

সহজ, ঝটপট আর দারুণ মুচমুচে বাঁধাকপির পাকোড়া

কাঠের সেতুই ২০ গ্রামে স্বস্তির হাসি

রাবিতে বহুল প্রত্যাশিত ই-কার সেবা চালু

ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের শক্তিশালী দল ঘোষণা

শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্তকে পুলিশে দিলেন স্থানীয়রা

১০

হোয়াটসঅ্যাপে এলো নতুন ‘নোট’ ফিচার

১১

আবারও যমুনা অভিমুখে মিছিলের ঘোষণা ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের

১২

ব্যক্তিগত চ্যাট ফাঁসের পর বিয়ে স্থগিত, মুখ খুললেন গায়কের মা

১৩

প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১৪

হত্যা মামলার প্রধান আসামি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

১৫

লটারির পর একযোগে ৬৪ এসপিকে বদলি

১৬

লটারিতে এসপি নিয়োগে মেধাবী কেউ বাদ পড়েনি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৭

ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নতুন নির্দেশনা

১৮

সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সব বাহিনী প্রস্তুত : সিইসি

১৯

দাঁতের জন্য মারাত্মক খারাপ যে ৫ খাবার

২০
X