চলমান ভয়াবহ বন্যায় ভেসে গেছে বাসস্থান, কৃষি জমি, মাছের ঘের, গবাদিপশু। বন্যার পানি কিছুটা কমে গেলেও এখন অবধি বেশিরভাগ বন্যার্ত মানুষের চুলায় জ্বলেনি আগুন। প্রতিবেশীদের দেওয়া চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, রুটি খেয়েই অধিকাংশ দিন কাটছে।
এমন অবস্থায় গত ১০ দিন ধরে ৪০০ বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রতিদিন দুবেলা করে মেজবানির আয়োজন করেছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ। চেয়ার-টেবিলে বসিয়ে এলাহি আয়োজনে খাওয়ানো হয় এই মেজবানি। প্রতি বেলাতেই দেওয়া হচ্ছে রান্না করা সুস্বাদু খাবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার চানপুর এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধের দক্ষিণ পাশে টিনের ঘরের ভেতর সারি সারি টেবিল-চেয়ার বসানো। অনেকেই প্রথম এসেছেন, আবার অনেকে ৭ থেকে ৮ দিন ধরে মেজবানিতে এসে রোজ দুবেলা খেয়ে যাচ্ছেন।
বিপদগ্রস্ত এসব মানুষের জন্য এভাবে মেজবানির আয়োজনে তারা খুব খুশি। দেখা যায়, সেখানে দুপুরের খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হচ্ছে মুরগির মাংস, ডাল ও সাদা ভাত। আয়োজকরা জানান, এক দিন মুরগি হলে অন্যদিন মাছের ব্যবস্থা করা হয়।
মেজবানিতে অংশ নেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেশিরভাগেরই ঘর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। তারা এখানে দুবেলা রান্না করা সুস্বাদু খাবার ছাড়াও ফ্রি ওষুধ ও ডাক্তার দেখাতে পারছেন।
মেজবানির আয়োজক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ কালবেলাকে জানান, বন্যার পানি বাড়ার পর থেকে গোমতী নদীর বাঁধের ওপর আশপাশের মানুষজন আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন। এখানে প্রথম দিন থেকেই আশ্রিত সবার জন্য বাবুর্চি রেখে রান্না করা হচ্ছে। বর্তমানে চার শতাধিক মানুষ খেতে আসেন আমাদের মেজবানিতে।
এখানে যারা খেতে আসেন তারা খাওয়ার পাশাপাশি ফ্রি চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে থাকেন। তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অর্থায়নে এখানে রান্নাবান্নার কার্যক্রম চলে। আমার এ কার্যক্রম দেখে আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মাও এক দিনের খাবার রান্না করে পাঠিয়েছেন।
মন্তব্য করুন