মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আন্দোলনে নিহত আবুলের বোনের জন্য একটি হুইল চেয়ার প্রয়োজন

বাবা-মায়ের সঙ্গে আবুল হোসেনের বোন পাখি আক্তার-ছবি কালবেলা
বাবা-মায়ের সঙ্গে আবুল হোসেনের বোন পাখি আক্তার-ছবি কালবেলা

স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না পাখি আক্তার (২২)। কথাও বলতে পারেন না তিনি। কারণ জন্ম থেকেই শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী পাখি। এর মাঝে ঘিরে আছে অভাব। পরিবারসহ অনেক কষ্টে দিন কাটে তাদের।

অনেকদিন ধরে পাখির জন্য একটি হুইল চেয়ার কেনার উদ্যোগ নিলেও পারেননি তার পরিবার। কারণ সেই টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি পাখির বাবা। এরই মাঝে তাদের পরিবারে শোকের আকাশ ভেঙে পড়েছে। গত ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন পাখির বড় ভাই আবুল হোসেন (৩৪)। সেদিন পাখির ভাইকে শুধু প্রাণে মেরেই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। তার ভাইয়ের লাশের সঙ্গে আরো কিছু লাশ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই দিন সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে নিখোঁজ হন দিনমজুর আবুল হোসেন। এরপর তার স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। না পেয়ে জিডি করতে গেলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। পরে ১৯ আগস্ট সেনাবাহিনী ও ছাত্রদের চাপে বাধ্য হয়ে জিডি নেয় আশুলিয়া থানার পুলিশ। এরপর ২৯ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় ভ্যানগাড়িতে লাশের স্তুপ করছে পুলিশ। সেই ভিডিওতে গায়ে থাকা ব্রাজিলের জার্সি ও লুঙ্গি দেখে আবুল হোসেনকে শনাক্ত করে তার পরিবার। কিন্তু শনাক্ত করলেও লাশটি আর কপালে জোটেনি তাদের। কারণ লাশ যে পুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।

এমন নির্মমতার শিকার আবুল হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ফুলঘর গ্রামের মনির মিয়ার ছেলে। তিনি সাভারের আশুলিয়া এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

স্বৈরাচার সরকার পতনের জন্য আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন আবুল হোসেন। ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। আরো এক ভাই এলাকায় অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করেন। বোন পাখি প্রতিবন্ধী। ভাইকে হারিয়ে বুকে ছবি নিয়ে শুধুই কাঁদছেন তিনি।

আবুল হোসেনের দুই সন্তানও রয়েছে। সন্তানদের নিয়ে এখন দিশেহারা তার স্ত্রী লাকি আকতার। আবুল হোসেনের পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্তবর্তী সরকারের কাছে তাদের দাবি আবুল হোসেনকে শহীদের মর্যাদা, হত্যার বিচার ও তাদের পরিবারের জন্য আর্থিক স্বচ্ছলতার ব্যবস্থা করা।

আবুল হোসেনের মা সালমা আক্তার বলেন, আবুল আমার বড় সন্তান। তার লাশটাও বুকে জড়িয়ে ধরা আমার নসিব হলো না। এই কষ্ট কারে দেখামু বাবা?

আবুল হোসেনের বাবা মনির মিয়া (৬৫) বলেন, আমার ছেলের মতো আরো বহু মায়ের সন্তানকে হত্যা করেছে তারা। আবুলের মৃত্যুর খবর জানার পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীসহ আরও অনেকেই খোঁজ নিতে এসেছিলেন আমাদের বাড়িতে। তারা তখন কিছু আর্থিক সহযোগিতাও করেছিলেন আমাদের।

তিনি আরো বলেন, বাবাকে হারিয়ে আবুলের দুই সন্তান এতিম হয়ে গেছে। এখন কীভাবে চলবে তাদের সংসার। আমি তো বৃদ্ধ মানুষ। আগের মতো আর কাজ করতে পারি না। নিজের সংসারই ঠিকমতো চালাতে পারি না। মেয়েটার জন্য একটা হুইল চেয়ার কিনতে পারছি না।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নিবার্হী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবুল হোসেনের পরিবারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সহযোগিতা প্রদান করা হবে। প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ৫৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ইরান থেকে বিতাড়িত আফগানদের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ল না, নিহত ৭১

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

২০ আগস্ট : আজকের রাশিফলে কী আছে জেনে নিন

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

ওসির স্বাক্ষর জাল করে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, পুলিশ সদস্যের নামে মামলা

বায়ুদূষণের শীর্ষে জাকার্তা, ঢাকার খবর কী?

টিভিতে আজকের খেলা

চক্ষু বিশেষজ্ঞ বিভাগে নিয়োগ দিচ্ছে রেড ক্রিসেন্ট

দিনাজপুরে প্রজন্ম লীগ নেতা তৈবুর গ্রেপ্তার

১০

ইতালি যাওয়ার এক দিন পরই বাংলাদেশির মৃত্যু

১১

আখেরি চাহার সোম্বা আজ, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি

১২

সেলস ম্যানেজার পদে স্কয়ার গ্রুপে চাকরির সুযোগ

১৩

ফজর নামাজের সময় মসজিদে নারকীয় তাণ্ডব, নিহত ২৭

১৪

দুপুরের মধ্যে ৭ জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

১৫

২০ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ 

১৭

হাসপাতালে ভর্তি মির্জা ফখরুল

১৮

২০ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৯

সৌদিগামী যাত্রীদের জন্য সুখবর

২০
X