বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ১২:৩১ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কেএনএফকে মুখোমুখি সংলাপের প্রস্তাব

কেএনএফকে মুখোমুখি সংলাপের প্রস্তাব

কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) তাদের দাবি লিখিত আকারে পাঠাতে ও মুখোমুখি সংলাপে বসার অনুরোধ জানিয়েছে শান্তি কমিটি। তবে কেএনএফের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি। শীঘ্রই এ ব্যাপারে জানানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কেএনএফের নেতারা।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে বান্দরবান জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির দ্বিতীয় ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা চলে। সংলাপে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

ভার্চুয়ালি আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি না হলেও উভয় পক্ষ আলোচনা চলমান রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা।

ভার্চুয়ালি আলোচনায় নেতৃত্বে ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে ছিলেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য ও বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি সচিব লালজারলম বম, সাধারণ সম্পাদক লালথাংজেম বম, খ্রিস্টান ধর্মীয় গুরু ও বম সোশ্যাল কাউন্সিলের উপদেষ্টা রেভারেন্ট পাকসিম বয়তং ও সাংবাদিকসহ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ জন সদস্য।

অপরদিকে, লালংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ময়ার নেতৃত্বে কেএনএফের পক্ষে ছিলেন লালসাং লম বম, লালসাংরেম বম ও জেরসিংলিয়ান বম। কেএনএফ নেতারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ল্যাপটপে ও মুঠোফোনে অংশ নেন। লালজংময় বমকে সাদা পর্দা টানানো একটি কক্ষে সোফার ওপর বসে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। তবে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ও কেএনএফ নেতাদের মধ্যে আলোচনায় কেএনএফের নেতারা ভারতের মিজোরাম, মায়ানমার না দেশের অভ্যন্তরে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়েছেন তা জানা যায়নি। ভিডিও কনফারেন্সে কেএনএফ’র প্রধান নেতা নাথান বম উপস্থিত ছিলেন না।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র ও জেলা পরিষদ সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কেএনএফ নেতাদেরকে তাদের দাবি-দাওয়া লিখিত আকারে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে কেএনএফের পছন্দের যেকোনো জায়গায় উভয়ের মধ্যে মুখোমুখি সংলাপে বসার আহ্বান করা হয়। কেএনএফ তাদের লিখিত দাবি ও মুখোমুখি বসার ব্যাপারে কোনো জবাব দেয়নি। তবে আলোচনা চলমান রাখার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন কেএনএফ নেতারা।

ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে, আলোচনাকালীন কোনো ধরনের সংঘাত সহিংসতায় না জড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে কেএনএফকে। পাবর্ত্য এলাকা বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় সম্প্রতি কুকি-চিনের সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি হওয়ায় তা নিরসনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠন করে আলোচনার উদ্যোগ নেন।

এদিকে, চলতি বছর গত জুলাই মাসের ১৯ তারিখে কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মধ্যে প্রথম ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে কেএনএফ তাদের প্রথম ও প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনসহ সাতটি দাবি রেখেছিল। শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে কেএনএফকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল তারা যেন তাদের প্রথম ও প্রধান দাবি থেকে সরে এসে আলোচনার টেবিলে বসে। তাদের প্রথম দাবি ছাড়া অন্যান্য দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেএনএফ তাদের লিখিত কোনো দাবি উত্থাপন করেনি।

জানা গেছে, কেএনএফ তাদের সশস্ত্র সংগঠনটি আত্মপ্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কেএনএফ নামে একটি ফেসবুক খোলে। সেখানে তাদের কল্পিত একটি মানচিত্র রয়েছে। সেই কল্পিত মানচিত্রে রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার নয়টি উপজেলা (রাঙ্গামাটির বরকল, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, জুড়াছড়ি উপজেলা ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা, থানছি, লামা ও আলিকদম) নিয়ে কুকি চিন রাজ্য হিসেবে গঠন করা হবে। এরপর গত বছর অক্টোবর মাস থেকে জঙ্গি ও কেএনএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব ও সেনা সদস্যের যৌথ বাহিনী। অভিযানের কারণে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। জঙ্গি দমনে র‌্যাব ও সেনাবাহিনী পাহাড়ে কেএনএফের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়া জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাসহ ৫৪ জন ও কেএনএফের ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে পাহাড়ে জঙ্গি দমনে র‌্যাব ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান শুরু করে। তবে গত ১৪ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে রোয়াংছড়ি ছাড়া সব উপজেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে প্রশাসন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঘরে বসেই ঘন ও স্বাস্থ্যবান চুল পেতে মেনে চলুন এই ৭ টিপস

সুস্থ সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা 

বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মুরগি

জামায়াত-শিবিরের ৭ নেতাকর্মীকে হত্যা, আ.লীগ নেতা মানিক গ্রেপ্তার

নতুন মামলায় গ্রেপ্তার পলক-আতিক, রিমান্ডে কিরণ

কক্সবাজারে মাহিন গ্রুপের ২ সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

ভক্তদের চমকে দিলেন হানিয়া আমির

রক্তের দাগ অনুসরণ করে মিলল অটোচালকের মরদেহ

ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার বাহক এডিস মশার ঘনত্ব জরিপ গতিশীল হোক

ডাকসুর পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা ছাত্রদলের

১০

জুলাই হত্যাযজ্ঞ / পুলিশ কর্মকর্তা সাজ্জাদের জামিন স্থগিত, আত্মসমর্পণের নির্দেশ

১১

বিল বেশি আসায় লাইনম্যানকে ‘মারধর’, মিটার খুলে নিল বিদ্যুৎ অফিস

১২

নেদারল্যান্ডস সিরিজ খেলবেন না মিরাজ

১৩

ভয়াবহ অভিযানের দ্বিতীয় ধাপ অনুমোদন, গাজার পথে ৬০ হাজার ইসরায়েলি সেনা

১৪

রাতের আঁধারে সরকারি ৩০০ বস্তা সার আটক

১৫

'ওয়ার ২'-এর সাফল্যের মাঝে প্রিয়জন হারালেন জুনিয়র এনটিআর

১৬

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে ‘পেছনে’ ফেলে ইতিহাস সালাহ’র

১৭

তেরোখাদায় পারভেজ মল্লিকের রাজনৈতিক কার্যালয় উদ্বোধন

১৮

দাঁত ব্রাশ করার পরও মুখে দুর্গন্ধ? চিন্তা নেই, রইল সহজ ৬ সমাধান

১৯

৪ নারীকে ধর্ষণসহ ৩২ অভিযোগে ক্রাউন প্রিন্সেসের ছেলের বিচার শুরু

২০
X