চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে ২৬টি বসতঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। নতুন করে অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় পানিতে ডুবে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে অভ্যন্তরীণ ৮টি সড়ক। অর্ধশত পুকুর ও মাছের ঘের ডুবে মাছ ভেসে গেছে। স্থানীয় লোকজন ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পারুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড জঙ্গল পারুয়া এলাকায় টানা বর্ষণে পাহাড় ধসে ১০টি, চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় ১৩টি, রাজানগর ইউনিয়নের বগাবিলী মারমা পাড়া এলাকায় ১টি ও হোছনাবাদ ইউনিয়নে দুটি কাঁচা বসতঘর ভেঙে গেছে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে সড়কে পানি, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যান চলাচল বন্ধ
চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের বনগ্রাম, পারুয়া ইউনিয়নের সোনাইছড়ি, বেতাগী ইউনিয়নের তিন সৌদিয়া এলাকা ও সরফভাটা ইউনিয়নে বসতঘর বিধ্বস্ত, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ার কারণে হাজার খানেক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। পোমরা ইউনিয়নের ছাইনিপাড়া ও হোছনাবাদ ইউনিয়নের কানুরখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে পড়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নের সেলিমা কাদের চৌধুরী ফটকের সামনে রোববার রাত ১২টার দিকে বড় আকৃতির একটি আকাশমনি গাছ সড়কের ওপর যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় গাছটি কেটে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের বনগ্রাম সাব-স্টেশন এলাকায় শিমুল গাছ ও বিকেলে মরিয়মনগর চৌমুহনী এলাকায় রেইন ট্রি গাছ পড়ে কাপ্তাই সড়কে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে গাছ দুটি কেটে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
চন্দ্রঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর ও পারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান একতেহার হোসেন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশনের কর্মকর্তা জাহেদুর রহমান বলেন, কয়েক দিনে কাপ্তাই সড়কের ৯টি স্থানে গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এসব স্থানে আমরা গাছ সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করি। অতি বর্ষণের কারণের গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে গাছগুলো পড়ে যাচ্ছে। মালিকানা কিংবা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে রোপণ করা ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো আগেভাগে কেটে ফেললে ঝুঁকি এড়ানো যাবে।
নতুন এলাকায় প্লাবিত হওয়ার পর রোপা আমনের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, প্লাবনের কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে রোপণ করা সব আমন চারা ডুবে গেছে। কয়েক দিন পানি থাকলেও লাগানো বন্যা সহনশীল জাতের চারা নষ্ট হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রত্যেক এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোতে সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন