চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে চুরি করা শার্ট পরে টিকটক ভিডিও করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ভিডিও দেখে পুলিশকে খবর দেন শার্টের আসল মালিক। পরে পুলিশ এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পশ্চিম সৈয়দপুর গ্রামে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শাহিন আলম (১৯) ও রাকিব হাসান (১৯)। তাদের বাড়ি একই এলাকায়।
জানা গেছে, শার্টের মালিক ক্ষুদ্র পোশাক ব্যবসায়ী শিরিন আক্তার। তিনি উত্তর পশ্চিম সৈয়দপুরের গর্দার বাড়ির প্রবাসী বোরহান উদ্দিনের স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিরিন আক্তার তার মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ছিলেন। এ সময় চোর সুযোগ বুঝে ঘরের মালামাল ও স্বর্ণালঙ্কা চুরি করে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে বাড়ি এসে শিরিন দেখেন তার ঘরের সব কিছু নিয়ে যায় চোর। এই ঘটনায় তিনি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। পরে তার ঘর থেকে চুরি হয়ে যাওয়া শার্ট পড়ে চোরচক্রের এক সদস্য টিকটক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ছেড়ে দেন। সেই টিক টক ভিডিও দেখে ভুক্তভোগী পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
শিরিনা আক্তার ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, তিনি সংসারের পাশাপাশি ঢাকা থেকে বিভিন্ন রকমের শাড়ি ও নারী-পুরুষের পোশাক কিনে বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করেন। তার মা শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় জুলাই মাসের ১ তারিখে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসার জন্য যায়। ওই মাসের ২৩ তারিখে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরেন। বাড়ি ফিরে দেখেন তার ঘরের জিনিসপত্র সব এলোমেলো। ঘরের টেলিভিশন ও সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ বিক্রির জন্য নিয়ে আসা আটটি শার্ট নিয়ে যায় চোর। পরে এই ঘটনায় তিনি সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি অভিযোগ আবেদন করেন। কিন্তু এক সপ্তাহেও চোরের কোনো হদিস মিলেনি। একদিন তারা এক আত্মীয় টিকটকে দেখতে পান তার চুরি হয়ে যাওয়া শার্ট পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ব্যক্তি টিকটক ভিডিও ছেড়েছেন। তার ঘরে থাকা কাপড়ের সঙ্গে টিকটকে পরিধান করা কাপড়ের সঙ্গে মিল পেয়ে পুলিশকে খবর দেন তিনি।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাতে টিকটকের শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার সঙ্গে থাকা সাহায্যকারী রাকিবের নাম বললে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজনেই চুরির কথা স্বীকার করেন। দুজনের ঘরে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি নতুন শার্ট উদ্ধার করা হয়। চুরি হওয়া টেলিভিশনটি আড়াই হাজার টাকা বিক্রি করে তারা। পরে পুলিশ সেই টেলিভিশনটি উদ্ধার করেন। কিন্তু স্বর্ণ কি করেছেন তা এখনো জানা যায়নি। স্বর্ণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে। বৃহস্পতিবার চোর দুজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন