চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস। এলাকায় ৫০টি বাচ্চা গরুর মৃত্যু হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গরুর খামারিরা।
এই ভাইরাস প্রতিরোধে পশু চিকিৎসকরা ভ্যাকসিন দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। রোগটি মশা বা মাছির মাধ্যমে আক্রান্ত পশু থেকে সুস্থ পশুর শরীরে ছড়াচ্ছে।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা সদরের দশমীপাড়া,জয়রামপুর,পুড়াপাড়া,নতিপোতা,কার্পাশডাঙ্গা হেমায়েতপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই ভাইরাসজনিত রোগ মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে প্রায় অর্ধশত গরু মারা গেছে। ক্ষুরা রোগের চেয়েও লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) মারাত্মক ভাইরাস। তবে এই ভাইরাসে বেশিরভাগ বাচ্চা গরু মারা যায়। বড় গরুগুলো আক্রান্ত হলে চিকিৎসা দিলে সেরে উঠছে।
দামুড়হুদা দশমী পাড়ার মৃত আজিজুল হকের ছেলে বিশারত আলি বলেন, আমার একটি ৭ মাসের বকন বাছুরের প্রথমে জ্বর হয়। পরে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। চিকিৎসা করানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যে মারা যায়।
দশমী পাড়ার আনছার আলি জানান, তার একটি বড় গরু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। প্রথমে জ্বর, গলা ফোলা ও ধীরে ধীরে শরীরে গুটি গুটি হয়। কিছুদিন পর সেগুলো গর্ত হতে সারা শরীর পশম উঠে যায়। কোন ধরনের চিকিৎসা দিয়ে ও কোন উপকার না হওয়ায় মরনাপন্ন অবস্থায় জবাই করে পুতে ফেলা হয়। দেখতে খুব ভয়ংকর লাগে এবং দুর্গন্ধে কেউ কাছে যেতে পারত না। বাছুরের কষ্ট দেখেও জবাই করে মাটিচাপা দিয়ে দিই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পল্লী পশু চিকিৎসক জানান, এই রোগ খুবই মারাত্মক। এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। এই রোগে আক্রান্ত প্রায় ৮০ ভাগ বাচ্চা গরু মারা যায়।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক শাওন বলেন, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর কোন প্রতিষেধক নেই। তারপরেও আমরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দিচ্ছি। এই ভাইরাসে বেশির ভাগ ছোট ৩ থেকে ৬ মাস বয়সি বাচ্চা গরু মারা গেলেও বড় আক্রান্ত গরুগুলো চিকিৎসা দিলে ৯৫ ভাগই সুস্থ হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এই ভাইরাসে ৫০টির মত বাচ্চা গরু মারা গেছে বলে বিভিন্ন পশু চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন