খুলনা ব‌্যু‌রো
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খুমেকে পরিচালক না থাকায় সেবায় গতি, প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা

খুমেকের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফরাজী, তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিএম ইখতিয়ার উদ্দিন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। ছবি : কালবেলা
খুমেকের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোহসীন আলী ফরাজী, তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা জিএম ইখতিয়ার উদ্দিন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। ছবি : কালবেলা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের অপেক্ষায় থাকা রোগী ভোগান্তি নিরসনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। আগে ৪ মাসের অধিক সময় নিউরোসার্জারি ও ইউরোলোজি বিভাগে অপারেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হতো রোগীদের। বর্তমানে এ সময় এক থেকে দেড় মাসে নেমে এসেছে। পূর্বে বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স ও ইজিবাইকে হাসপাতাল দখল হয়ে থাকলেও সে চিত্র পাল্টে গেছে অনেকটাই। পরিবর্তন এসেছে বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ রোগীর সেবায়ও। যার ইতিবাচক সাড়াও পড়ছে রোগীদের মধ্যে।

তবে নিয়মিত পরিচালক না থাকায় বার্ষিক ক্রয় প্রক্রিয়াসহ অর্থনৈতিক অনেক কার্যক্রম থমকে আছে। নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোহসীন আলী ফরাজী ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে সেবায় গতি ফিরলেও অনেক ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোহসীন আলী ফরাজীকে নিয়মিত পরিচালক পদে দায়িত্ব দেওয়া হলে অন্য সব জটিলতা কাটিয়ে সম্পূর্ণ রোগীবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১ মাস আগেও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক, উপপরিচালকসহ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের কেউ ছিল না। তৎকালীন পরিচালক স্বেচ্ছায় অবসরে চলে যাওয়ার আগে দায়িত্ব দিয়ে যান নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোহসীন আলী ফরাজীকে। দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে নিজ বিভাগের পাশাপাশি হাসপাতালের আমূল পরিবর্তন করেন তিনি। বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে হাসপাতাল দখলমুক্ত করা, অপারেশনের টেবিল বাড়িয়ে রোগী ভোগান্তি কমানো, বহির্বিভাগে দালাল নিয়ন্ত্রণসহ অনেক কর্মকাণ্ডের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে হাসপাতালে। এর ভিতরে হাসপাতালে উপপরিচালক ও একজন নতুন আরএমও যোগদান করলেও কোনো নিয়মিত পরিচালকের পদায়ন হয়নি। ফলে আটকে আছে বার্ষিক ক্রয় প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও সিদ্ধান্ত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালে বর্তমানে এমএসআর, খাবার, লিলেনসহ বিভিন্ন টেন্ডারের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে, যে কারণে হাসপাতাল থেকে রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর সাপ্লাই পাচ্ছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ক্রয় প্রক্রিয়া বা টেন্ডার সম্পন্ন করার জন্য নিয়মিত পরিচালক প্রয়োজন হয় বা মন্ত্রণালয় থেকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব দিলেও তিনি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।

সার্জারি ৯-১০ ওয়ার্ডে ভর্তি আকলিমা খাতুন বলেন, হাসপাতালে একটি স্যালাইন, সিরিঞ্জ, এমন কি ক্যানোলাও ফ্রিতে দেয় না। এখানে ফ্লোরে থাকাটাই ফ্রি। কোনো ওষুধ ফ্রি দেয় না। কিছুই দেয় না। সব বাইরে থেকে কিনতে বলে।

মেডিসিন ৬ ওয়ার্ডে ভর্তি লাবনী আক্তার বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি আছি। যে কয়বার পরীক্ষা করাতে গিয়েছি সে কয়বার টাকা দিতে হয়েছে। স্যালাইন, সিরিঞ্জ, ক্যানোলা সবই কিনতে হয়েছে। কিছুই দিচ্ছে না। বলে সাপ্লাই নাই।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আমি হাসপাতালে একা ছিলাম। অনেক কিছুই একা সহ্য করেছি। মোহসীন স্যার দায়িত্ব নেওয়ার পর ম্যাজিকের মতো অনেক কিছু পরিবর্তন করেছেন। মানুষ আগের থেকে সেবা বেশি পাচ্ছে। মোহসীন স্যারকে মন্ত্রণালয় থেকে রেগুলার অথবা ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হলে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো স্যার দেখভাল করলে হাসপাতালের সেবার মানের আরও দ্রুত উন্নতি হবে।

ডা. মোহসীন আলী ফরাজি বলেন, সাবেক পরিচালক স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার সময় আমাকে না বলে দায়িত্ব দিয়ে চলে গেছেন। তখন কেউ ছিল না। আমি এই লাইনের মানুষ না। আমার বিভাগ দেখে বাকি সময় আমি এখানে দিচ্ছি। আগে শিক্ষক লাউঞ্জে সময় দিতাম এখন পুরো সময় হাসপাতালেই মানুষের সেবা নিশ্চিতে বসে থাকি। রোগীদের দায়বদ্ধতা থেকে বসে থাকতে হয়। হাসপাতালে এখন নিয়মিত পরিচালক না দিলে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব না। আমাকে দায়িত্ব দিতে হবে এমন না, যে কোনো যোগ্য একজনকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া উচিত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিজের সাফাই গেয়ে যা বললেন ক্যাবরেরা

ট্রাম্পের নোবেল ভাগ্য নির্ধারণ করছেন কারা?

রাজধানীতে বজ্রসহ বৃষ্টি আভাস, তাপমাত্রা নিয়ে নতুন বার্তা

সমন্বিত ৯ ব্যাংকে ১০১৭ পদে চাকরির সুযোগ, আবেদনে লাগবে যেসব যোগ্যতা

আজ ১৬ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

শাকিবের জন্যই ভারতীয় সিনেমা ছাড়লেন তিশা

ফিলিপাইনে ভূমিকম্পের জেরে ইন্দোনেশিয়ায় সুনামি শুরু

মাছ ধরতে গিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিহত

স্বর্ণ ও রুপা আজ কত দামে বিক্রি হচ্ছে, জেনে নিন

টুইঙ্কেল আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইত না: অক্ষয়

১০

ফোন ভালো রাখতে কতদিন পরপর রিস্টার্ট করবেন, জেনে নিন

১১

ভাঙা সড়কে মাছ ছাড়লেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

১২

আজকের বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে যে পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৩

রক্তের শর্করা মাপবেন কখন, ঘুম থেকে উঠেই নাকি প্রাতরাশের পর?

১৪

চট্টগ্রাম বন্দরে সভা-সমাবেশে ৩০ দিনের নিষেধাজ্ঞা

১৫

নীরবে শরীরে ছড়াচ্ছে ক্যানসার, সকালে এই একটি লক্ষণ দেখা দিলেই সতর্ক হোন

১৬

এনআইডি পেয়ে সেই জসিম বললেন, ‘অবিস্মরণীয় মুহূর্ত’

১৭

শাহরুখ খানকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দিলেন পরিচালক

১৮

স্বামীসহ ২ ডজন মামলার আসামি শিপরা গ্রেপ্তার

১৯

জানা গেল শহিদুল আলমের সবশেষ অবস্থা

২০
X