শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
টাকা নেই হুইল চেয়ার কেনার

বাবার পিঠে চড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে হাসেম

পরীক্ষা শেষে বাবার পিঠে চড়ে ফিরছেন হাসেম। ছবি : কালবেলা
পরীক্ষা শেষে বাবার পিঠে চড়ে ফিরছেন হাসেম। ছবি : কালবেলা

মেরুদণ্ডের গুরুতর রোগে আক্রান্ত আবু হাসেমের কোমর থেকে দুই পায়ের পুরোটাই অবশ। একা হাঁটতে পারেন না। দাঁড়ালেই দুই পা কাঁপতে থাকে। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি তাকে। বাবার কাঁধে চড়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে আসেন তিনি।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সরকারি আদর্শ কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি।

জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার রাজনগর গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর উসমান গনি ও গৃহিণী মাহমুদা বেগমের ছেলে আবু হাসেম। তার দুটি পা অবশ অবস্থায় থাকায় একা দাঁড়াতে না পারায় চলাফেরায় স্বজনদের সহযোগিতা নিতে হয়।

আবু হাসেমের বাবা উসমান গনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে দেখলে আমার ছেলেকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবেই মনে হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ২০১৭ সালে হঠাৎ পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এরপর আকস্মিকভাবে কোমর থেকে তার দুই পা অবশ হয়ে যায়। পরে আমরা তাকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাই। সেখানে মেরুদণ্ডের অপারেশন করেও ছেলেটা সুস্থ হননি। সেখানের ডাক্তার ছেলেটাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও টাকার অভাবে সম্ভব হয়নি।

আবু হাসেম বলেন, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) আমার প্রথম পরীক্ষা হয়েছে। আমার শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও আমি সমাজের বোঝা হতে চাই না। ভালো কোনো কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই।

তিনি আরও বলেন, শারীরিক সমস্যার জন্য একা চলাফেরা করতে না পারায় একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য নাই বাবার। তবে সুস্থতার জন্য টাকা নয় দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা সহায়তার দাবি করেন সরকারের কাছে।

এ ব্যাপারে শেরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশীদ বলেন, আমার দেখা মতে অনেক অভিভাবক আছেন যারা তাদের সন্তানদের পড়ালেখা করাতে চান কিন্তু সন্তানরা করে না। এক্ষেত্রে হাসেম উল্টা। শত প্রতিকূলতার মাঝে তার চেষ্টা অন্য ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনুকরণীয়। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হলে তারা দেশ ও সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অবতরণের সময় মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত

জানা গেল কবে দেশে ফিরবেন শহিদুল আলম

পচা চাল কিনে বাধ্যতামূলক অবসরে খাদ্য কর্মকর্তা

ভুল সময়ে ওজন মাপলে জানবেন ভুল তথ্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি সাইকেলিস্টদের

কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

ভোট নিয়ে জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি

ফুটবল খেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

প্রাথমিকে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবিতে খতমে নবুওয়তের বিক্ষোভ

জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে গণভোট দিতে হবে : গোলাম পরওয়ার

১০

স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ গড়তে ৩১ দফার বিকল্প নেই : ড্যানী

১১

ভারতের ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

১২

অতিরিক্ত মদ্যপানে আরও চারজনের মৃত্যু

১৩

‘গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে’

১৪

অযোধ্যায় ভয়ংকর বিস্ফোরণ, অভিযান চলছে

১৫

শরীর যথেষ্ট ফাইবার পাচ্ছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

১৬

সঙ্গী আপনাকে নিয়ে আগ্রহী নন বুঝবেন যে ৬ আচরণে

১৭

৩১ দফা জনগণের মুক্তির সনদ : শরীফ উদ্দিন জুয়েল

১৮

জানা গেল ৪৯তম বিসিএসের ফল প্রকাশ কবে

১৯

সাংবাদিক হায়াতের পরিবারের পাশে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান

২০
X