ধনবাড়ী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কবরের পাশে ৯৭ বছর ধরে চলছে কোরআন তিলাওয়াত

কবরের পাশে চলছে কোরআন তিলাওয়াত। ছবি : কালবেলা
কবরের পাশে চলছে কোরআন তিলাওয়াত। ছবি : কালবেলা

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর নওয়াব শাহী জামে মসজিদে ৯৭ বছর ধরে ২৪ ঘণ্টাই চলছে কোরআন তিলাওয়াত। ওই মসজিদ-লাগোয়া রয়েছে মধুপুরের প্রয়াত জমিদার সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর কবর। এর পাশেই চলে কোরআন পাঠ। শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও এমনটিই হচ্ছে ধনবাড়ী উপজেলার ৭০০ বছরের পুরোনো এ জামে মসজিদে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগেও থেমে থাকেনি কোরআন তিলাওয়াত। পালাক্রমে এ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন পাঁচজন হাফেজ।

জানা যায়, সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ১৬ শতাব্দীতে এক কক্ষবিশিষ্ট এ মসজিদ নির্মাণ করেন। ১১৫ বছর আগে সর্বশেষ নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদটি সম্প্রসারণ করে এর আধুনিক রূপ দেন।

সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩.৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪.৫৭ মিটার। সংস্কারের পর মসজিদটি হয় বর্গাকৃতির। করা হয় তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মুঘল স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। মসজিদের মেঝে আর দেয়াল কাচের টুকরো দিয়ে নকশাদার মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা নিপুণ কারুকার্য। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইক নকশায় অলংকৃত, যার অধিকাংশ ফুলেল নকশা। মসজিদের ভেতরে ঢোকার জন্য পূর্বদিকের বহু খাঁজে চিত্রিত খিলানযুক্ত তিনটি প্রবেশপথ, উত্তর ও দক্ষিণে আরও একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে।

প্রায় ১০ কাঠা জায়গার ওপর নির্মিত মসজিদটির চারদিক থেকে চারটি প্রবেশপথ ও ৯টি জানালা এবং ৩৪টি ছোট ও বড় গম্বুজ রয়েছে। বড় ১০টি মিনারের প্রতিটির উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মসজিদের দোতলার মিনারটির উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। ৫ ফুট উচ্চতা এবং ৩ ফুট প্রস্থের মিহরাবটি দেখতে বেশ আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন।

পূর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিমের দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে। ৩০ ফুট উচ্চতার মিনারের মাথায় স্থাপিত ১০টি তামার চাঁদ মিনারের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। মসজিদে সংরক্ষিত রয়েছে ১৮টি হাড়িবাতি, যেগুলো শুরুর দিকে নারিকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হতো।

এ মসজিদে নামাজের সময় ছাড়া এক মিনিটের জন্যও কোরআন তিলাওয়াত বন্ধ হয় না বলে জানিয়েছেন মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন। এ মসজিদে একজন খতিব, একজন ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন, ৮ জন খাদেম, কোরআন তেলাওয়াতের জন্য রয়েছেন পাঁচজন হাফেজ।

জানা যায়, কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ১৯২৭ সালে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এ মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তিলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। ১৯২৯ সালের ১৭ এপ্রিল মারা যান এ নবাব বাহাদুর। মসজিদের একপাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। তার মৃত্যুর পর এখন পর্যন্ত চলছে এ কোরআন তিলাওয়াত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

একই গ্রামে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ১২ জন আহত

ভারত-বাংলাদেশ নারী সিরিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ঢাবির জসীম উদ্দীন হলের একই রুম থেকে বিসিএস ক্যাডার হলেন ইমতিয়াজ-জাকির 

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ নিয়ে যা জানা গেল

নাশকতার পরিকল্পনার সময় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

৩২ নম্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতি

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড / এই রায় আমাকে বিশেষভাবে আতঙ্কিত করেছে : শশী থারুর

সাদামাটা জীবনযাপন করা সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মারা গেছেন

খালে ভাসছিল সবজি বিক্রেতার মরদেহ

মিশনের প্রেস উইংয়ে প্রশাসন ক্যাডার থেকে নিয়োগ, ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ

১০

শীতে গরম পানি পান করছেন, এটি উপকারী না ক্ষতিকর?

১১

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস 

১২

হাজী ও নান্না বিরিয়ানির নামে প্রতারণা

১৩

সংগ্রাম থেকে সাফল্যের শিখরে শেহনাজ গিল

১৪

বিএনপির এক নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার

১৫

ঠোঁটের চারপাশে কি কালচে ছোপ, ২ সপ্তাহেই মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

১৬

পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

১৭

হাসিনার যেদিন ফাঁসি হবে, সেদিন কলিজা ঠান্ডা হবে : শহীদ সজলের মা

১৮

ছয় গোলের উৎসবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল জার্মানি

১৯

চবি ছাত্রদলের এক নেতার পদ স্থগিত

২০
X