কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড

সাবেক চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

বাঁ থেকে- অধ্যাপক মো. জামাল নাছের ও অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ। ছবি : সংগৃহীত
বাঁ থেকে- অধ্যাপক মো. জামাল নাছের ও অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জামাল নাছের ও সাবেক সচিব অধ্যাপক নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তদন্তে বোর্ডের আরও ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ১৬ ও ১৭ মার্চ দুদকের কুমিল্লা কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। নোটিশে তাদের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারাও জড়িত এমন প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান শুরু করবে দুদক।

যে ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বক্তব্য শোনা হবে তারা হলেন, উপসচিব (প্রশাসন) এ কে এম সাহাবুদ্দিন, উপসচিব (একাডেমিক) মো. সাফায়েত মিয়া, সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. আসাদুজ্জামান, সাবেক উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) মোহাম্মদ ছানাউল্লাহ, সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. গোলাম হোসেন, সাবেক উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মো. শহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট (কম্পিউটার শাখা) বিকাশ চন্দ্র মল্লিক, নিরাপত্তা কর্মকর্তা কেয়া রায়, দারোয়ান মো. আক্তার হোসেন ও ঠিকা কর্মচারী মো. সজিব।

তাদের বক্তব্য শোনার পর সংশ্লিষ্টতা, সাক্ষ্য, না অভিযুক্ত, তা নির্ধারণ করা হবে। তবে এদের মধ্যে একাধিক পুরোনো কর্মকর্তা যারা বোর্ডে দীর্ঘদিন বিভিন্ন পদে ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও অনিয়ম, অর্থ আত্মসাৎ, লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের সমন্বিত কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. তারিকুর রহমান ওই ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হাজির হতে অনুরোধ জানিয়েছেন।

বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক মো. নূর মোহাম্মদ ১৪ বছর ধরে এখানেই কর্মরত ছিলেন। তিনি প্রথমে উপসচিব ও পরে সচিব হন। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর তাকে নোয়াখালী সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। তিনি ওই কলেজে গণিতের বিভাগীয় প্রধান। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রেষণে কর্মকর্তার তিন বছরের বেশি থাকার নিয়ম নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়ি হওয়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের তদবিরে এত দীর্ঘসময় এখানেই ছিলেন।

অধ্যাপক মো. জামাল নাছের চাকরি শেষের প্রায় দুই বছর বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এখান থেকেই অবসরে যান। তার আগে বিরতি দিয়ে তিনি বোর্ডের কলেজ পরিদর্শকও ছিলেন।

জামাল নাছের শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের পর ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ৪১টি শূন্য পদে লোক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ওই সার্কুলারে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রোগ্রামার, সহকারী প্রোগ্রামার, উপসহকারী প্রকৌশলী, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ আহ্বান করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যান জামাল নাছের অবসরে যাওয়ার আগের দিন তড়িঘড়ি করে ৩৯ পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করে যান। যাদের ওই সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এমপিরা সুপারিশ করেছিলেন। এসব নিয়োগে অবৈধ লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে। পোষ্য কোটা ১০ ভাগ থাকলেও কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে চাকরিজীবীদের ক্ষোভ রয়েছে। আবেদনে বয়সও সঠিকভাবে মানা হয়নি।

অভিযোগ উঠেছে, মসজিদের ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যানের শ্বশুরবাড়ি কিশোরগঞ্জ এলাকার একজনকে। প্রতিবন্ধী কোটায় যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তিনি কেমন প্রতিবন্ধী, তা দেখে বোঝার উপায় নেই। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ দেওয়া ব্যক্তিকে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আনসার-ভিডিপি সদস্য নিয়োগ পাওয়ার পর প্রশিক্ষণ নিয়ে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তারা আগে প্রশিক্ষণ নেননি।

এ বিষয়ে বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান জামাল নাছের কালবেলাকে বলেন, যেসব অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন ও হাস্যকর। জনবল সংকটে নিয়মিত কাজে সমস্যা হতো। অনেক দৌড়াদৌড়ি করে বোর্ডের কাজে গতিশীলতা আনতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। এটা এক ধরনের হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়।

সাবেক সচিব নূর মোহাম্মদ বলেন কালবেলাকে, সুনামের সঙ্গে চাকরি করেছি। দুর্নীতি করিনি। কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. সামছুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, তিনি ২২ জানুয়ারি যোগ দিয়েছেন। বেশি কিছু জানেন না। যে ১০ জনকে দুদক ডেকেছে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন দেশের বাইরে আছেন, তাকেও জানানো হয়েছে।

দুদক কুমিল্লার উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে। তাই তাদের ডাকা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারত-বাংলাদেশ নারী সিরিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ঢাবির জসীম উদ্দীন হলের একই রুম থেকে বিসিএস ক্যাডার হলেন ইমতিয়াজ-জাকির 

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ নিয়ে যা জানা গেল

নাশকতার পরিকল্পনার সময় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

৩২ নম্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতি

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড / এই রায় আমাকে বিশেষভাবে আতঙ্কিত করেছে : শশী থারুর

সাদামাটা জীবনযাপন করা সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মারা গেছেন

খালে ভাসছিল সবজি বিক্রেতার মরদেহ

মিশনের প্রেস উইংয়ে প্রশাসন ক্যাডার থেকে নিয়োগ, ইনফরমেশন অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ

শীতে গরম পানি পান করছেন, এটি উপকারী না ক্ষতিকর?

১০

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জন নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস 

১১

হাজী ও নান্না বিরিয়ানির নামে প্রতারণা

১২

সংগ্রাম থেকে সাফল্যের শিখরে শেহনাজ গিল

১৩

বিএনপির এক নেতাকে সব পদ থেকে বহিষ্কার

১৪

ঠোঁটের চারপাশে কি কালচে ছোপ, ২ সপ্তাহেই মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

১৫

পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

১৬

হাসিনার যেদিন ফাঁসি হবে, সেদিন কলিজা ঠান্ডা হবে : শহীদ সজলের মা

১৭

ছয় গোলের উৎসবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল জার্মানি

১৮

চবি ছাত্রদলের এক নেতার পদ স্থগিত

১৯

অভিজ্ঞতা হলো জীবনের সবচেয়ে বড় সঞ্চয়: দীপিকা পাড়ুকোন

২০
X