বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের ছুরিকাঘাতে জোবায়ের হোসেন (২৪) ও নাহিদ হোসেন (২০) নামে কনের দুই ভাই আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপালনগর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, বোনকে বাল্যবিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কালিতলা গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে প্রায় ২ বছর আগে বিদ্যালয় যাওয়ার পথে অপহরণ করে একই এলাকার শেহলিয়াবাড়ি গ্রামের রিয়াজ উদ্দীনের ছেলে আব্দুল মোতালিব। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা সাইদুর রহমান বাদী হয়ে আব্দুল মোতালিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। এ অবস্থায় দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন করে বিয়ের দিন তারিখ ধার্য করা হয়।
সেই মোতাবেক সোমবার বিকেলে আব্দুল মোতালিবসহ ২৫ থেকে ৩০ জন বরযাত্রী কনের বাড়িতে আসেন। খাওয়া দাওয়া শেষে বিয়ে নিবন্ধনের (কাবিন) দেন মোহরের টাকা নির্ধারণ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ফলে কনের ভাই জোবাইয়ের হোসেন ও নাহিদ হোসেন বোনকে আব্দুল মোতালিবের সঙ্গে বিয়ে দিতে অস্বীকার করেন। এতে আব্দুল মোতালিব ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জোবায়ের হোসেন ও নাহিদ হোসেনকে ছুরিকাঘাতে আহত করে।
এ বিষয়ে বর আব্দুল মোতালিব বলেন, প্রায় দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক ধরে ওই স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করেছি। এ বিয়ে তারা মেনে না নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করে। সোমবার দুপক্ষ সমঝোতার মাধ্যমে লোকজন নিয়ে বিয়ে বাড়িতে যাই। এ সময় তারা নতুন করে অতিরিক্ত দেনমোহর দাবি করে। তাদের দাবি না মানায় তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে চলে আসি। কাউকে ছুরিকাঘাত করা হয়নি।
স্কুলছাত্রীর বাবা সাইদুর রহমানের দাবি, আমার নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে অপহরণ করা হয়। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ফলে আদালত মামলার আসামি আব্দুল মোতালিবকে কারাগারে পাঠিয়ে মেয়েকে আমার জিম্মায় দিয়েছে। সেই থেকে মেয়ে আমার বাড়িতেই আছে। আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আব্দুল মোতালিব তার লোকজন নিয়ে এসে আবারও জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে তারা আমার দুই ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
ধুনট থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, বিয়ে অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতের মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন