অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে হবিগঞ্জের বাহুবলের ফয়জাবাদ বধ্যভূমি। টিলা ঘেঁষা এ বধ্যভূমি রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়। ঝোপ-ঝাড়ের আড়ালে পড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের এই স্মৃতিচিহ্ন।
বধ্যভূমির বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেলেও তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। মাঝে মাঝে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ এখানে ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করলেও রক্ষণাবেক্ষণ করে না কেউই। উপরে উঠার সিঁড়ির কিছু অংশে রেলিং থাকলেও নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় উপরে উঠতে পারেন না বৃদ্ধরা। একমাত্র শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে প্রদীপ প্রজ্বলন ছাড়া আর কোনো জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানও হয় না এখানে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাহুবল উপজেলার শেষ প্রান্তে ঢাকা-সিলেট ভায়া মৌলভীবাজার সড়কে আমতলী চা-বাগানে এ বধ্যভূমির অবস্থান। উপজেলার মিরপুর বাজার থেকে কিছু দূর এগুলেই জ্বালানি তেল শোধনাগার। এর প্রধান ফটকের ঠিক উল্টো পাশেই এ বধ্যভূমি। আমতলী চা-বাগানের চার নম্বর সেকশনের একটি টিলার ওপর এটি অবস্থিত। এর চারপাশেই টিলায় ঘেরা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাহুবল উপজেলা ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য বাঙালি নারী-পুরুষকে এখানে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হায়েনারা। দীর্ঘদিন এ স্থানটি চরম অবহেলায় পড়ে ছিল। ২০০৬ সালে সরকার এটি রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেয়। গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানে টিলায় ওঠার জন্য নির্মাণ করা হয় একটি সিঁড়ি। উপরে হত্যাকাণ্ডের স্থানটিতে বধ্যভূমি নির্মাণ করা হয়। শুধু ঐতিহাসিক নয়, সৌন্দর্যময় এ স্থানটিতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন বেড়াতে আসেন। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে এটি রক্ষণাবেক্ষণে কারও কোনো উদ্যোগ নেই।
এ ব্যাপারে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহুয়া শারমিন ফাতেমা কালবেলাকে জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো উপজেলার সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পালন করার চেষ্টা করি।
তিনি আরও বলেন, বধ্যভূমির বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্কারকাজসহ বধ্যভূমিটিকে আকর্ষণীয় ও পর্যটকমুখর করতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান কালবেলাকে জানান, দেশের সুনামধন্য পত্রিকা দৈনিক কালবেলার মাধ্যমে আমি বধ্যভূমি যাতে অচিরেই সংকার কাজসহ পর্যটকমুখর করতে এবং জাতীয় দিবসগুলো পালন করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
মন্তব্য করুন