নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের লাখ টাকা চাঁদা দাবির একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ অডিও রেকর্ডটি ভাইরাল হয়।
জানা গেছে, বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার হাজি সফুর উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে অভিযুক্ত বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া অডিওতে শোনা গেছে, ‘বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ বলেন, তোমরা কি আমারে পাগল মনে করো, নাকি আমি ছাগল। তুমি বলছো সকালে আসবা এক লাখ টাকা নিয়া। তুমি আসো। তোমার কাছে টাকা না থাকলে কী তোমাকে বেঁধে রাখবো। টাকা না থাকলে তোর বাপেরে বের করে টাকা নিমু (নেব), চলবো। তুই সকাল বেলা এক লাখ টাকা নিয়ে আয়। বাকি টাকা তোর বাপেরে বের করে নিব। তুই যেই গাড়ি দিয়ে ঘোরাফেরা করোস সেই গাড়ি বন্ধক দিয়ে আমি টাকা নেব। বাকি টাকা তোর বাবার কাছ থেকে নেব আমি। তোরে কী আল্লাহ কম দিছে। সকাল ৮টা বা ৯টার দিকে টাকা রেডি রাখিস।’
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের একাধিক হত্যা মামলায় বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার সফুরউদ্দিনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় তিনি কারাভোগ করেছেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে তিনি জেলে থাকাকালে মামলা থেকে খালাস পেতে ও জেল থেকে মুক্তি পেতে ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সফুরউদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিও রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার হাজী মো. সফুর উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, অডিও রেকর্ডের বিষয়টি সত্য। বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম হিরণ বিভিন্ন সময় আমার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে ও জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার কথা বলে তিন দফায় আমার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা নিয়েছে বিএনপি নেতা হিরণসহ তার সহযোগীরা। সর্বশেষ প্রায় দেড় মাস আগে আমার ছেলের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছে। সেই ঘটনার অডিও রেকর্ড আপনারা পেয়েছেন। সে আমার অনেক ক্ষতি করেছে।
মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ২০২২ সালে একটি হত্যা মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়। পরে এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪টি মামলা দিয়েছে ওই বিএনপি নেতা হিরণসহ তার লোকজন। এই মামলাগুলো সব রাজনৈতিক মামলা।
বিষয়টি অস্বীকার করে বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ কালবেলাকে বলেন, আমি কোনো টাকা চাইনি ও নেইনি। অডিও রেকর্ডটি এডিট করা। বরং তার পরিবারের সদস্যরা আমাকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব কালবেলাকে বলেন, অডিওটা আমি শুনেছি। তবে তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন