রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরের এ ঘটনায় কলেজের বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কিছু নার্সও। পরে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে পাল্টা হামলা চালান। এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলছে কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন বলেন, ‘ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা শেষ করে বিএ-এর সমমান চান। আর বিএসসি নার্স ও এর শিক্ষার্থীরা এটির বিরুদ্ধে। এই নিয়ে দুপক্ষেরই টানা আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। এর জের ধরেই দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ শুরুর সময় আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। তদন্ত করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে তারা আন্দোলন নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তখন হঠাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হন বিএসসি ইন নার্সিংয়ের কিছু শিক্ষার্থী। তারা বাগবিতণ্ডা শুরু করেন। ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীদের তারা কটূক্তি করেন।
একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল থেকে কয়েকজন বিএসসি নার্সও এসে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তারা গেট ভেঙে কলেজে ভাঙচুরও চালান। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর শুরু হলে ৮ ভ্যান পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরমধ্যেই আহতদের রামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরাও হাসপাতালে যান। একপর্যায়ে তারা ৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কয়েকজন বিএসসি নার্সকে লাঞ্ছিত করেন।
এ ছাড়া তারা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন, এমন অভিযোগে তারা হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন সেনাবাহিনীর একটি দল এসে তাদের আটকে দেন। পরে পরিচালক কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহম্মদ বলেন, ‘আহতরা হাসপাতালে। তাই ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরাও হাসপাতালে এসেছিল। তখন তারা ওয়ার্ডে যায়, আমার অফিসের দিকেও আসার চেষ্টা করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। দুপক্ষেই যারা যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের শাস্তি হবে।’
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘দুপক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে দুপক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। কিন্তু ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা আবার হাসপাতালে গিয়ে ঝামেলা করছিল। সেটাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এটা কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। তারা বিষয়টি দেখবে।’
মন্তব্য করুন