পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মাত্র ৮ মাসে মুখস্থ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ১২ বছরের এক শিশু। অল্প সময়ের মধ্যে কোরআন হেফজ করার এই বিস্ময়কর সাফল্যে খুশি তার শিক্ষক, পরিবার ও সহপাঠীরা।
বলছিলাম কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার হাফেজ মুহাম্মদ আবু রায়হানের (১২) কথা। ওই শিশু উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের পূর্ব পোমকারা এলাকার প্রবাসী মুহাম্মদ রেজাউল করিম ও শিল্পী বেগম দম্পতির ছেলে। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্পাবাস এলাকায় অবস্থিত মুহিব্বানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগ থেকে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে বড় মাপের আলেম হওয়ার স্বপ্ন তার।
মাদ্রাসার শিক্ষকরা বলছেন, পড়াশোনায় তার একাগ্রতা ও পরিশ্রম তাকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে। তার এই কৃতিত্বে অন্য শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, হাফেজ মুহাম্মদ আবু রায়হান কোরআনে হাফেজ হওয়ার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বারীয়া দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আল্লামা মুফতি ছৈয়দ মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা বারীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে পরিচালিত মুহিব্বানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হাফেজিয়া মাদ্রাসার নাজারা শাখায় ভর্তি হয়। এরপর সে তার মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে মাত্র ৮ মাসে কৃতিত্বের সঙ্গে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তার এই বিস্ময়কর সাফল্যে অত্যন্ত খুশি পরিবারের লোকজন ও শিক্ষকরা। তার এই কৃতিত্বের খবরে আনন্দিত মাদ্রাসার আশপাশের মানুষও।
হাফেজ মুহাম্মদ আবু রায়হান বলেন, পরিবারের সবার ইচ্ছে পূরণ করাতে আমাকে হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে পড়াশোনা করেছি। মাদ্রাসার হুজুররা আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। আর এজন্যই আমি ভালো ফলাফল করতে সক্ষম হয়েছি। আমি ভবিষ্যতে পড়াশোনা করে বড় আলেম হতে চাই। আমি সকলের কাছে দোয়া চাচ্ছি।
ওই শিশুর চাচা প্রবাসী ওমর ফারুক বলেন, আমার ভাতিজা আবু রায়হান কৃতিত্বের সঙ্গে হাফেজ হওয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি। আমার মরহুম বাবার ইচ্ছা ছিল পরিবারের যেকোনো একজন সদস্যকে হাফেজ বানাবে। আজকে আমার বাবার ইচ্ছা পূরণ করছে আমার ভাতিজা। আপনারা আমার ভাতিজার জন্য দোয়া করবেন সে যেন আলেম হয়ে ইসলামের খেদমত করতে পারে।
আবু রায়হানের বাবা প্রবাসী মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমার ছেলের সাফল্যের খবর শুনে আমি এতোটা আনন্দিত হয়েছি যা ভাষায় বোঝাতে পারব না। আমার ছেলের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাচ্ছি। আপনারা সকলে দোয়া করলে আমার ছেলে একদিন বড় আলেম হতে পারবে।
মুহিব্বানে রাহমাতুল্লিল আলামিন হাফেজিয়া মাদ্রাসার প্রধান হাফেজ রবিউল্লাহ সিকদার বলেন, এ বছর আমাদের মাদ্রাসা থেকে খুবই অল্প সময়ে দুইজন শিক্ষার্থী হেফজ সম্পন্ন করেছেন। তার মধ্যে আবু রায়হান একজন।
মাদ্রাসার প্রধান হাফেজ রবিউল্লাহ সিকদার জানান, পড়াশোনার শুরু থেকেই রায়হান আমাদের দৃষ্টি কেড়েছে তার মেধা ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহের কারণে। পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ দেখে আমরাও তাকে সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছি। রায়হান ও তার সহপাঠী সাইফুদ্দিনের সাফল্যে আমরা অভিভূত। তাদের জন্য দোয়া ও শুভকামনা থাকবে। আশা করছি একদিন তারা মা-বাবার মুখ উজ্জ্বল করবে।
মন্তব্য করুন