বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা দীর্ঘ লড়াইয়ে, হাজারো জীবন দিয়ে, জেল-জুলুম সহ্য করে একটা পরিবর্তনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলাম। আজ সেই ক্ষেত্রে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে।
তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ বহু বছর ধরে লড়াই করছে একদফার দাবিতে। আমাদের এই দাবির একটা অংশ অর্জিত হয়েছে, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লজ্জাজনক, অপমানকর পলায়ন করতে হয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকারকে। কিন্তু আমাদের দাবির মূল উদ্দেশ্য, যে কারণে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন চেয়েছিলাম, সেই গণতন্ত্র এখনো পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়নি।
বুধবার (২১ মে) ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে এখনো প্রশ্ন তুলিনি। কিন্তু বেশ কিছু বিষয়ে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে সরকারে থেকে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করার বিষয়ে। আমাদের ভালো লাগে না, কারণ আমরা সরকারটাকে পছন্দ করি।
তিনি বলেন, আমরা বিস্মিত হই— নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল রায় দেওয়ার পরেও প্রশাসনিক ক্ষমতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যিনি মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছেন তাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। যে নির্বাচন কমিশনকে এই অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছে, সেই নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীনভাবে মতামত ব্যক্ত করলেও তাদের হুমকি দেওয়ার জন্য ঘেরাও কর্মসূচি হচ্ছে। বিষয়গুলো ভালো দৃষ্টান্ত না।
সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার যতগুলো সংস্কার কমিটি গঠন করেছে, একটা বের করেন যেটা আমাদের ৩১ দফায় নেই। বরং ৩১ দফায় আছে এমন অনেক বিষয়ে এখনো সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়নি। সংস্কার কমিশন যদি না-ও হতো, কোনো সমঝোতা যদি না-ও হয়, আমাদের সুযোগ হলে এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব, ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য ফরম নবায়ন কমিটির সদস্য সচিব এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েতুল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম ও সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন।
মন্তব্য করুন