পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলের দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার তাদের এই কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন।
আসন্ন ঈদুল আজহা (কোরবানির ঈদ) উপলক্ষে সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় গরিব, অসহায় ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দ চাল বিতরণের আগেই চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের ভাগ বসানোর অপকৌশল ফাঁস হওয়ার ঘটনায় এ নোটিশ দেওয়া হয়।
এর আগে ফাঁস হওয়া ওই তালিকায় পিআইও অফিস, সাংবাদিক, মানিক টাইপিং, গ্রাম পুলিশ, শাহিন, ট্যাগ অফিসার, থানা ও পরিষদ সচিব ১৫টি মোট ৮০০ কেজি চাল এভাবে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, অষ্টমনিষা ইউনিয়নে মোট বরাদ্দকৃত ১ হাজার ২৭০ জন উপকারভোগীকে আগামী ঈদ উপলক্ষে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল দেওয়া হবে। অথচ বিতরণের আগেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ জন ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষরসহ একটি পৃথক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ওই তালিকায় ৮০টি কার্ড বরাদ্দ দেখানো হয়েছে বিভিন্ন অফিস ও ব্যক্তিবিশেষের নামে। ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের তৈরি তালিকাটি অনুযায়ী বরাদ্দ দেখানো হয়েছে পিআইও অফিস ১০টি, সাংবাদিক ৫টি, মানিক টাইপিং ১০টি, গ্রাম পুলিশ ১০টি, শাহিন ৫টি, ট্যাগ অফিস ৫টি, থানা ২০টি ও পরিষদ সচিব ১৫টি মোট ৮০০ কেজি চাল।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ইউনিয়নজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ইউনিয়নের প্রকৃত দরিদ্রদের বাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা গরিবের চালে ভাগ বসানোর জন্যই এমন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন, যা আগেই ফাঁস হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুলসহ ৯ ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ফেরদৌস আলম বলেন, দুস্থদের চাল বিতরণে অনিয়ম করার কৌশল হিসেবে আমার অফিসের নাম ব্যবহার করে তারা যে তালিকা তৈরি করেছে সেটি দেখে আমি হতবাক। আমার প্রায় ১২ বছরের চাকরি জীবনে এমন অপকৌশল দেখিনি। তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, দেখা যাক, তারা কী জবাব দেন।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভিজিএফ চালের বরাদ্দে থানার নাম ব্যবহার করা হয়েছে, বিষয়টি খুবই দুঃখ ও লজ্জাজনক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার অনুরোধ জানিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার কালবেলাকে বলেন, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের ডাকা হয়েছিল। তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার জবাব চাওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন