রাঙামাটিতে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে পাহাড়ি ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বিসিক শিল্পনগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম ও রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের অন্তত ১৫ স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করা লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে মাইকিং করছে জেলা, উপজেলা ও পৌর প্রশাসন।
এ ঘটনায় জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। বাঘাইছড়িতে পানিবন্দি প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। রাঙামাটি শহরে আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে ১৬১ জন।
রোববার (১ মে) ভোর থেকে রাঙামাটিতে থেমে থেমে হালকা থেকে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, রাঙামাটি চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ভেঙ্গে সড়কে পড়েছে। যা অপসারণে কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। জেলা শহরের ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ২টিতে আশ্রয় নিয়েছে ১৬১জন। জেলা সদরের মানিকছড়ি বিসিক শিল্পনগরীতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা, এতে শিল্পকারখানার অনেক মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের কারণে কাচালং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সব কৃষি জমি ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খুললেও এখনও সেখানে লোকজন আসেনি।
তবে উপজেলা প্রশাসনের ধারণা বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পানি আরও বাড়তে পারে, তখন লোকজন আশ্রয় কেন্দ্র মুখি হবেন। এছাড়াও জেলার জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষিজমি। পাহাড়ি ঢলে জুরাছড়ি যক্ষ্মা বাজার সড়কের বেশকিছু অংশ ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে এবং কাউখালি ঘিলাছড়ি সড়কের বেশকিছু অংশ ধসে নিয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার কালবেলাকে জানান, বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নদীর পানি বাড়ছে। এতে বাঘাইছড়ি পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ড ছাড়া সব জায়গায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে আমরা মাইকিং করছি। তবে বাড়ি ঘরে পানি না ঢুকায় লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হচ্ছে না। কিন্তু বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে যেতে পারে। সন্ধ্যার দিকে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হবে আশা করছি।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা কালবেলাকে জানান, জেলার বিভিন্ন সড়কে অন্তত ১৫টি স্থানে পাহাড় ভেঙ্গে মাটি পড়েছে, যা সরানোর কাজ চলছে। তবে কোনো জায়গায় সড়ক বন্ধ নেই।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ কালবেলাকে জানিয়েছেন, জেলায় দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে। যাতে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য প্রশাসন কাজ করছে।
মন্তব্য করুন