পাবনার ভাঙ্গুড়ায় একটি মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম আব্দুল গণি হত্যার আলোচিত ঘটনায় দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা নেশার টাকা জোগাড় করতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন পাবনা জেলার চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরজুমা আকতার।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে ভাঙ্গুড়া থানায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গ্রেপ্তার দুই কিশোর উপজেলার বৃদ্ধমরিচ ও চণ্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাদের বয়স ১৪ ও ১৬ বছর। তারা এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার চন্ডিপুর সিকেবি আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী ও চণ্ডিপুর জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল গণির মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন তার ছেলে বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা আরজুমা আকতার বলেন, গত সোমবার রাতে সিকেবি আলিম মাদ্রাসার উত্তর পার্শ্বের থাকার কক্ষের ভেতরে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দ্বারা মাথায়, বাম চোয়ালে, পিঠে এবং ডানহাতের কবজিতে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায় গ্রেপ্তার দুই কিশোর। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, মাদক সেবনের জন্য ভুক্তভোগীর জমানো টাকা লুট করতে তারা এমনটি করেছে। ঘটনার দিন তারা দুজনই ডান্ডি (গাম) খেয়ে নেশাগ্রস্ত ছিল।
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার আব্দুল গণিকে দাদা সম্বোধন করত দুই কিশোর। সোমবার রাতে স্থানীয় একটি মাঠে মাদক সেবন করে সাড়ে ১১টার দিকে তারা মাদ্রাসায় ভুক্তভোগীর কক্ষে যায়। সেখানে কৌশলে একজন গণি মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে ওয়াজ দেখতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর অন্য কিশোর চুপিচুপি ভেতরে ঢুকে ছেনি দিয়ে গণি মিয়ার মাথায় ও বাঁ চোয়ালে সজোরে আঘাত করে। ওই কক্ষে থাকা দায়ের উল্টো পিঠ দিয়ে মাথায় কয়েকটি আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে গণি মিয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে দুজনই মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে যায়। পরে তাদেরই একজন ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে ভুক্তভোগীর ছেলেকে মোবাইল ফোনে জানায়, তার বাবাকে কে বা কারা কুপিয়েছে। পরে তার স্বজনরা গণি মিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া পর্যন্ত একজন কিশোর তাদের সঙ্গেই ছিল।
পরে ঘটনার তদন্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুজনকে আটক করা হলে তারা ঘটনা স্বীকার করে বলে জানায় পুলিশ।
মন্তব্য করুন