খুলনার কয়রা সদর ইউনিয়নের ২নং কয়রা গ্রামের খালের ওপর নির্মিত ওড়াতলা নামক স্থানের সেতুটি ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগের মধ্য রয়েছে দুপাড়ের মানুষ। প্রতিদিন চরম ঝুঁকির মধ্যে পারাপার হচ্ছে কোমলমতি শিশু, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়রা সদর ইউনিয়নের কয়রা খালের ওপর ওড়াতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানে ১৯৯৬ নির্মিত সেতুটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতুর দুই পাশে নেই কোনো রেলিং। বেশির ভাগ পিলারের পলেস্তরা খসে পড়েছে এবং সেতুটির একাংশ খালে ভেঙে পড়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেরিয়ে গেছে রড। ভেঙে যাওয়া সেতুটির বড় একটি অংশে কাঠের পাটাতন ও বাঁশ বিছিয়ে দিয়ে পার হচ্ছে ৪ গ্রামের হাজারও মানুষ। যে কোনো সময় পুরা সেতুটি ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা বলছেন, ১৯৯৬ সালে নির্মিত এই সেতুটি পরবর্তীতে আর কোনো সংষ্কার করা হয়নি। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলে এলজিইডি থেকে একটি সাইনবোর্ড টানানো হয়। তার কিছুদিন পর সেতুটির একাংশ খালে ভেঙে পড়ে। ভেঙে যাওয়া সেতুটি বছর পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
২নং কয়রা গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, সেতু দিয়ে বৃদ্ধ ও শিশুদের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। সেতু দিয়ে পারাপারের সময় অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। স্কুলে ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূর্বের স্থলে একটি ব্রিজ নির্মাণের।
কয়রা সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ২নং কয়রা ও ওড়াতলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে ১৯৯৬ সালে খালের ওপর সেতুটি নির্মিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণতে রয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নির্মাণের কোনো লক্ষণ নেই। সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন হাজারও মানুষ আতঙ্ক আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সেতুটি যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
কয়রা সদর ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান এসএম লুৎফর রহমান বলেন, কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ ও ২নং ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে নির্মিত সেতুটির ওপর দিয়ে পার্শ্ববর্তী ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের জনসাধারণের কয়রা সদরে আসতে হয়। ওই ঝুকিপূর্ণসেতু দিয়ে চলাচলের সময় ভয়ে থাকতে হয়। কখন যেন এটি ভেঙে পড়ে। এমন আশঙ্কা নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।
এলজিইডি কয়রার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী শাফিন শোয়েব বলেন, কয়রা খালের ওপর নির্মিত ঝুকিপূর্ণ সেতুটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেতুটি পুনর্নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, সেতুটি অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। জনদুর্ভোগ লাঘবে জরুরি ভিত্তিতে সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন