বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন এক কলেজছাত্র। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শখের বশে নিজের পোষা পাতি সরালি পাখি তিনি স্বেচ্ছায় বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে পীরগাছা বন বিভাগের কাছে তিনি ছানাসহ মা পাতি সরালিকে হস্তান্তর করেন।
জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার হুলাশুগঞ্জ এলাকার এইচএসসি পরীক্ষার্থী রিদয়নুল ইসলাম রিয়ন শখ করে একটি দেশি পাতি সরালি পাখি দীর্ঘদিন ধরে পুষছিলেন। যে পাখিটির এরই মধ্যে ৮টি ছানাও হয়েছে; কিন্তু পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে দুদিন আগে পাখিটি বিক্রির জন্য তিনি ফেসবুকে পোস্ট দেন।
পোস্টটি নজরে আসে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আস সাদিকের। তিনি বিষয়টি দ্রুত জানিয়ে দেন ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের প্রকাশনা সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহেলকে।
সোহেল রিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে জানান, পাতি সরালি বাংলাদেশের সংরক্ষিত বন্যপ্রাণী। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী এই পাখি ধরা, পালন বা বিক্রি আইনত নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। রিয়ন বিষয়টি বুঝতে পেরে কোনো দ্বিধা ছাড়াই পাখিটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।
রিয়ন বলেন, আমি জানতাম না যে এটি বিক্রয় করা বেআইনি। জানার পরই সিদ্ধান্ত নিই যে, পাখিটি প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমার শখের চেয়ে আইন ও প্রাণীর অধিকারই বড়।
ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের প্রকাশনা সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সোহেল বলেন, এটি খুবই ইতিবাচক একটি উদাহরণ। তরুণ প্রজন্ম এভাবে সচেতন হলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আরও সহজ হবে।
পীরগাছা বন বিভাগের অ্যাটাস্ট অফিসার মঈন উদ্দীন বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে রিয়ন যে ভূমিকা রেখেছে, তা প্রশংসনীয়। আমরা পাখিটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। খুব দ্রুতই এটিকে প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে।
পাখিটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্ন্যাক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের রংপুর প্রতিনিধি হাবিবুল বাশার ও মো. শান্ত বাবু।
মন্তব্য করুন