কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুলের ভবনের নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কাজ শেষ না করে বিলে স্বাক্ষর করিয়ে সব টাকা উত্তোলন করে নেওয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নির্মাণের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। গত বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করে। কিন্তু নির্মাণকাজে ঠিকাদাররা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছে। শুধু তাই নয় দরজায় সেগুন কাঠের পরিবর্তে মেহগনি কাঠ ও জানালায় নিম্নমানের থাই গ্লাস ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে ভবনটি টেকসই কতটুকু হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তা ছাড়া কাজ সম্পন্ন না করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বিল ভাউচারে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের লোকজন আগাম স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন পরিচালনা পর্ষদের লোকজন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের (এডহক কমিটির) সদস্য শাহআলম মিয়া বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। তা ছাড়া নির্মাণকাজ শেষ না করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব মো. আ. হাকিমের কাছ থেকে বিল ভাউচারে (সমুদয় বিলের টাকা) স্বাক্ষর নিয়েছেন ঠিকাদারের লোকজন ও প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন। আমরা মনে করি অনিয়মের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক জড়িত।
পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আগেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। এখন আবার অনিয়মের সঙ্গে জড়িতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব মো. আ. হাকিম বলেন, আমি কনস্ট্রাকশনের কাজ বুঝি না। প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন আমাকে অনুরোধ করেছেন। তাই তার অনুরোধে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেছি। তা ছাড়া মেহগনি কাঠের পরিবর্তে সেগুন কাঠ ব্যবহার করবেন বলে ঠিকাদারের লোকজন ও প্রকৌশলী জনগণের সম্মুখে বলেছেন। আওয়ামী লীগের আমলে আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্মাণকাজে কোনো ধরনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। তবে ভুলবশত সেগুন কাঠের পাল্লার বদলে মেহগনি কাঠ দেওয়া হয়েছিল। সেটা পরিবর্তন করে সেগুন কাঠ ব্যবহার করা হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন বলেন, কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। সেগুন কাঠের পরিবর্তে মেহগনি ব্যবহার করেছিল। ঠিকাদারকে সেগুলো পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বিল ভাউচারে স্বাক্ষর নিলেও ঠিকাদারকে চেক দেওয়া হয়নি। কাজ সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়ার দুই মাস পর চেক দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন