কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। একদিনে এটিই সর্বোচ্চ শনাক্ত বলে ডেঙ্গুর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান।
শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসার চেয়ে সচেতনতা জরুরি, তাই আতঙ্কিত না হয়ে ডেঙ্গু মশার বংশ বিস্তার রোধ করতে হবে।
তিনি জানান, গত মে থেকে জুন মাসের বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। তারা আক্রান্ত হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসা থাকা অবস্থায় ঢাকায় ৫ জন ও কুমিল্লায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের ৫ জনই নারী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডেঙ্গুর জীবাণুবাহক এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার এবং জমে থাকা পানিতে ডিম পাড়ে। এ মশার ডিম দুই বছর পর্যন্ত জীবিত থাকে। তাই আমাদের বাসস্থানের আশপাশে থাকা যে কোনো পানির পাত্র, ফুলের টব, ব্যবহারহীন ড্রাম, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা কিংবা প্লাস্টিক প্যাকেট– এসবই এডিস মশার প্রজননের আদর্শ জায়গা। ডেঙ্গু প্রতিরোধে এসব জায়গায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না। নিয়মিতভাবে এসব পাত্র পরিষ্কার করতে হবে অথবা সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে ফেলতে হবে, যেন মশা ডিম পাড়ার সুযোগ না পায়।
এসব বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে শুক্রবার থেকে দাউদকান্দি পৌরসভার ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় প্রতিদিন ১২০০ পরিবারকে তদারকি করা হচ্ছে। এভাবে তিন থেকে চার দিন করতে পারলে আশা করছি সফল হবো।
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ছয়জন, মে মাসে ৫৯ জন এবং জুন মাসে ৮৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। আর জুন মাসে উপজেলায় সরকারি এবং বেসরকারিভাবে পাঁচ হাজার ব্যক্তির পরীক্ষায় দুই হাজারের মতো ডেঙ্গু পজেটিভ ধরা পড়ে। একদিনে সবচেয়ে বেশি বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ৩৯৭ জনের মধ্যে ১০০ জনের ডেঙ্গু পজেটিভ শনাক্ত হয়। শুক্রবার পর্যন্ত ছয়জন ডেঙ্গু রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন ও পরিসংখ্যানবিদ সোহানুর রহমান।
মন্তব্য করুন