বগুড়ার শাজাহানপুরে এক ব্যক্তিকে মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবল জনতার হাতে আটক হয়েছেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আটক পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন (৩২) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলাধীন কয়রা শহরতলি গ্রামের আহমেদ আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত থাকা অবস্থায় রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে জুয়ার আসর থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ থাকায় বর্তমানে তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ডিবি পরিচয়ে নিশ্চিন্তপুর শাহ্পাড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বাকি শাহকে (৬০) আটক করতে যায় কনস্টেবল রুহুল আমিন। কিন্তু তিনি বাড়িতে না থাকায় তার পরিবারের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে চলে যান রুহুল আমিন। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ফের আব্দুল বাকি শাহর বাড়িতে যান কনস্টেবল রুহুল আমিন। সেখানে গিয়ে আব্দুল বাকি শাহর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে (৩২) বলে, গোপন সংবাদে জানা গেছে তার বাড়ির কোনায় কিছু আছে। আপনাকে নিয়ে সেটা উদ্ধার করতে হবে। একপর্যায়ে সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে তার বাড়ির দক্ষিণ পাশে কলাবাগানে নিয়ে গিয়ে একটি ছোট্ট টিনের কৌটা দেখতে পায় এবং কৌটাটি সবুজকে তুলতে বলে। এরপর ওই কৌটা খুলে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট দেখতে পায়। এসময় সবুজকে বলে, ৫ আগস্টের পরে অনেক থানায় মিসিং হওয়া বুলেট আপনার বাড়ির পেছনে পাওয়া গেল। এ ঘটনায় মামলা হবে এবং আপনাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এমন ভয় দেখিয়ে সবুজের কাছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন কনস্টেবল রুহুল আমিন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা রুহুল আমিনকে আটকে মারধর করে।
অন্যদিকে সবুজের বড় বোন শাপলা খাতুন (৩৮) পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করেন এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি অবগত করেন। সংবাদ পেয়ে সেনাসদস্য ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং দুপুর ২টার দিকে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এসময় রুহুল আমিনের হেফাজত থেকে পাঁচটি রাবার বুলেট ও তার ব্যাগে থাকা ১৫টি গুলি উদ্ধার করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, জনতার হাতে আটক ও গণধোলাইয়ে আহত অবস্থায় কনস্টেবল রুহুল আমিনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চাঁদা দাবির ঘটনায় ভিকটিমের বড় বোন শাপলা খাতুন বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেছেন।
মন্তব্য করুন