সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:১০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

তিস্তা গিলে খাচ্ছে সিঙিজানি গ্রাম, নিঃস্ব শতাধিক পরিবার

গত কয়েকদিনে ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে অন্তত শতাধিক পবিবার। ভেঙে গেছে বসতভিটা, গাছপালা ও শত শত বিঘা জমি। ছবি : কালবেলা
গত কয়েকদিনে ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে অন্তত শতাধিক পবিবার। ভেঙে গেছে বসতভিটা, গাছপালা ও শত শত বিঘা জমি। ছবি : কালবেলা

উজানের ঢলে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। ভেঙে তছনছ করেছে একের পর এক ফসলি মাঠ ও বসতভিটা। নদীতে বিলীন হয়েছে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও অন্তত একশ একর জমি। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন অন্যরা।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার ও সিঙিজানি গ্রামে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত কয়েকদিনে ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে অন্তত শতাধিক পরিবার। ভেঙে গেছে তাদের বসতভিটা, গাছপালা ও শত শত বিঘা জমি। নদীতে বিলীন হয়েছে পাট, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত। ভাঙনের মুখে পড়েছে লালচামারের ভোরের পাখি নামক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ভাঙন ঠেকাতে কয়েক মিটার স্থানে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে সিঙিজানি গ্রামের শেষ প্রান্তের কয়েক মিটার স্থানেও। কিন্তু ভোরের পাখি স্কুল থেকে সিঙিজানি গ্রাম পর্যন্ত থাকা পরিবারগুলো পড়েছেন ভাঙনের ঝুঁকিতে। দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে হয়তো নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে এলাকাটি।

নদীতে মাছ ধরতে থাকা লালচামারের আব্দুল ছলিম বলেন, ‘মাসখানেক ধরে ভাঙন চলছে। সেখানে ২৮০টি পরিবারের মধ্যে ১০০টির ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ভেঙে গেছে। আর সিঙিজানিতে ছিল প্রায় ২২০-২৩০টি পরিবার। এখন সেখানে রয়েছে ২০-৩০টি পরিবার। ভাঙনের পর যে যেখানে পেরেছে চলে গেছে।’

ওই একই গ্রামের হামিদা বেগম বলেন, ‘নদী আগে অনেক দূরে ছিল। গত ২-৩ দিনে বাড়ির কাছাকাছি এসেছে। ভেঙে গেলে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে কোথায় যাব, কী করে খাব?’ ভাঙন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ চান তিনি।

সিঙিজানি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন একেবারে চুলোর কিনারে এসেছে বৃদ্ধ দম্পতি আব্দুস সামাদ (৮০) ও জরিফুল বেগমের (৭৫)। জরিফুল কালবেলাকে জানান, ‘নদীর পেটে গেছে আমাদের পাট ও ভুট্টাসহ ৫ বিঘা জমি। শেষে গত দুই দিনে বাড়িতে এসেছে সেই ভাঙন। বাড়িটিও যদি যায়, তবে কী করবেন, কোথায় যাবেন এবং কী করবেন তারা জানেন না।

তিনি বলেন, ‘একে তো স্বামী বৃদ্ধ। তার ওপর সে অসুস্থ। রাতে ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার ভয় লাগে।’ তাই স্বামীকে নিয়ে জেগে থাকেন তিনি।

পাশেই বাড়ি আব্দুস ছামাদের ছোট ভাই আবুল হোসেনের। তিনি বলেন, ‘আমারও ৫ বিঘা জমি পাটসহ ভেঙে গেছে নদীতে।’ চিন্তায় অস্থির তিনিও।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, সিঙিজানিতে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে তা রক্ষায় ৩৯ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ চলমান রয়েছে। স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে একটি উন্নয়ন প্রকল্প আমরা এরই মধ্যে বোর্ডে পাঠিয়েছি। আশা করি, চলতি সপ্তাহে অনুমোদন হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা

জবিতে ১০ সদস্যের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি গঠন

সেনাবাহিনীকে নিয়ে গুজবের শেষ কোথায়?

এমবাপ্পের পেনাল্টি মিস দেখে রিয়াল সমর্থকের মৃত্যু

শীতে সুস্থ থাকার সহজ ৭ উপায়

শাহরুখ-আরিয়ানের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে

দীর্ঘ বিরতির পর বিটিভিতে আসিফ আকবর

৪ দপ্তরে নতুন সচিব

অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদ সম্মেলন আজ

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না

১০

চাঞ্চল্যকর কৃষক হত্যা মামলার ৩ আসামি গ্রেপ্তার

১১

কেন ক্ষমা চাইলেন শাহরুখ?

১২

খালি পেটে যে ৩ খাবার খেলে হতে পারে বিপদ!

১৩

আফগানিস্তান / মধ্যরাতে ভূমিকম্পে নিহত ৭, আহত ১৫০

১৪

আজ ঢাকার বাতাস কতটা বিষাক্ত?

১৫

আজ জেলহত্যা দিবস

১৬

নামাজে দাঁড়ালেন বাবা, কুপিয়ে হত্যা করল মাদকাসক্ত ছেলে

১৭

প্রতিদিন সকালে আমলকী খাওয়ার জাদুকরী গুণ জানলে অবাক হবেন

১৮

আজ যেমন থাকবে ঢাকার আবহাওয়া

১৯

যৌথ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াতসহ ৮ দল

২০
X