ক্যানসার রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে চিকিৎসায় সম্পূর্ণরূপে নিরাময় সম্ভব বলে জানিয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. মো. জিয়াউর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, ক্যানসার একটি মরণব্যাধি। এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো শতভাগ চিকিৎসা পদ্ধতি পৃথিবীতে আবিষ্কার হয়নি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি শনাক্ত করা গেলে এবং চিকিৎসা গ্রহণ করলে সেটি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা সম্ভব।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে বিশ্ব হেড-নেক ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি-শোভাযাত্রা ও আলোচনাসভা আয়োজন করে এন জেএলইএনটি সেন্টার ও এনজেএল ফাউন্ডেশন।
তিনি বলেন, যারা মাদকসেবন করছেন তারা বিশেষ করে ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে ধূমপান, মদপান, তামাক সেবন করলে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসব সেবন করা থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে এবং ক্যানসারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করলে ক্যানসার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ডা. জিয়াউর বলেন, এসব দিবসের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণের মধ্যে এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। ক্যানসার সার্ভাইভারদের এনে সম্মানিত করার জন্য ‘এন জে এল’ পরিবারকে তিনি ধন্যবাদ জানান এবং এর মাধ্যমে রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসা গ্রহণে আগ্রহী করে তুলবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল উমর রাশেদ মুনির। তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের মধ্যে হেড-নেক ক্যানসারের অবস্থান সপ্তম হলে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে এ রোগটি সংক্রমণের অবস্থান চতুর্থ ধাপে চলে এসেছে। মূলত সচেতনতার অভাবে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। মূলত আমাদের দেশে এ রোগটির বৃদ্ধির প্রধান কারণ হচ্ছে সচেতনতার অভাব। সকলের জানা উচিত, বেশিরভাগ হেড-নেক ক্যানসার প্রতিরোধযোগ্য এবং প্রতিরোধের জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই। সেজন্য প্রান্তিক পর্যায়ে ক্যানসার সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘এনজেএল ইএনটি সেন্টার’ ও ‘এনজেএল ফাউন্ডেশনের’ চেয়ারম্যান বিশিষ্ট নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিশেষজ্ঞ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নুরুল হুদা নাঈম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বদরুল আমিন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ডা. মাহবুবুল আলম, এনেসথেসিয়া বিভাগের ডাক্তার আব্দুল লতিফ, এনেসথেসিয়া বিভাগের ডাক্তার রুবেল আহমদ, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সরদার বনিউল আহমদ, ইএনটি বিভাগের ডাক্তার এনামুল ইসলাম, সিলেটের ডাকের বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, মহানগর দায়রা জজ আদালত সিলেটের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, এনজেএল ইএনটি সেন্টার এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম তালুকদার, এসিআই ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাবিবুর রহমান ফারহান। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি-শোভাযাত্রা যাত্রা শুরু হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেল রোডসংলগ্ন একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের হলরুমে আলোচনায় মিলিত হয়।
মন্তব্য করুন