

সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষী সদস্যদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু এবং ৮ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পেচারকান্দা এলাকার চুমকি আক্তার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) তাদের পরিচয় প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর।
রোববার আহত চুমকি আক্তারের স্বামী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত সেনাসদস্য মো. ইকরামুল হোসেন বলেন, এ বছরের নভেম্বরের ৭ তারিখ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সুদানে যান চুমকি। সেখানে শনিবার বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর গ্রেনেডের কয়েকটি স্প্রিন্ট তার ডান হাত এবং ডান পায়ে লেগেছে। পরে তাকে হেলিকপ্টারে ৭০০ কিলোমিটার দূরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইব্রাহিম আরাবী নামে তার ২ বছর বয়সি এক ছেলে রয়েছে।
তার স্ত্রী ঘিওর উপজেলার পেচারকান্দা এলাকার আব্দুল হামিদ ও জহুরা বেগমের মেয়ে। তার ছেলেকে শাশুড়ির কাছে রেখে গেছেন তার স্ত্রী।
শান্তি রক্ষা মিশনে আহত সেনাসদস্য চুমকি আক্তারের মা জহুরা বেগম বলেন, আমার চার মেয়ের মধ্যে চুমকি সবার ছোট। তার ছেলেকে আমার কাছে রেখে গেছে।
কান্নারত কণ্ঠে বলেন, তার ডান হাত ও পায়ে আঘাত লাগছে। ওই দেশে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমার স্বামী কৃষি কাজ করে। আমগো কোনো ছেলে নাই।
এদিকে ছয় বাংলাদেশি নিহত এবং আটজন আহত হন জানিয়ে রোববার তাদের পরিচয় প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর।
নিহতরা হলেন— কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা (নাটোর); সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম (কুড়িগ্রাম), শামীম রেজা (রাজবাড়ী) ও শান্ত মন্ডল (কুড়িগ্রাম); মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা)।
আহত শান্তিরক্ষীরা হলেন— লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান (কুষ্টিয়া), সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন (দিনাজপুর), কর্পোরাল আফরোজা পারভিন ইতি (ঢাকা), ল্যান্স কর্পোরাল মহিবুল ইসলাম (বরগুনা); সৈনিক মো. মেজবাউল কবির (কুড়িগ্রাম), মোসা. উম্মে হানি আক্তার (রংপুর), চুমকি আক্তার (মানিকগঞ্জ) ও মো. মানাজির আহসান (নোয়াখালী)।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা কালবেলাকে জানান, বিষয়টি জানার পর তার পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।
মন্তব্য করুন