পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী পেয়ারার বাগানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে উপজেলা প্রশাসন। শুক্রবার (১ আগস্ট) বাগানের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতে উচ্চ শব্দে বাজানো লাউড স্পিকারের কারণে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
নেছারাবাদ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রায়হান মাহমুদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই মোবাইল কোর্টে লাউড স্পিকার জব্দ করা হয় এবং সতর্ক করা হয় ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য।
রায়হান মাহমুদ জানান, প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এখানে ভিড় করছেন। কিন্তু কেউ কেউ উচ্চশব্দে গান বাজিয়ে পরিবেশদূষণ করছেন, যা বাগানের স্বাভাবিকতা নষ্ট করছে। পর্যটকদের সহযোগিতায় এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। তাই জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলেন, অতিরিক্ত শব্দের কারণে শুধু প্রকৃতি নয়, বাগানের উৎপাদনেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, আগামীতেও নিয়মিতভাবে এ ধরনের অভিযান চলবে এবং যারা নিয়ম ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানা এলাকাটি একটি প্রাকৃতিক ও পরিবেশ-সংবেদনশীল এলাকা। ফলে স্থানীয় জনগণের স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ও পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণের স্বার্থে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- কোনো ধরনের বাদ্যযন্ত্র (লাউডস্পিকার, সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদি) ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। উচ্চশব্দ পরিবেশদূষণ সৃষ্টি করে এবং স্থানীয় জনজীবন ও বন্যপ্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। পেয়ারা বাগানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সী পর্যটক আগমন করেন। তাই প্রত্যেককে অশ্লীলতা পরিহার করে অবশ্যই শালীনতা বজায় রাখতে হবে।
বড় আকারের ট্রলার বা উচ্চ শব্দযুক্ত ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে বাগানে প্রবেশ করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এ ধরনের যানবাহন পানিপথে ভিড় ও শব্দ সৃষ্টি করে, যা বাগানের পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ছোট নৌকা বা মাঝারি আকারের নৌযান ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে, যাতে করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা পায় এবং অন্যান্য পর্যটকরাও নিরাপদে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন। পর্যটকদের সঙ্গে নিয়ে আসা খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ, পলিথিন, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য বর্জ্য পদার্থ পানিতে ফেলা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন