ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৪৬ এএম
আপডেট : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কর্তৃপক্ষের নীরবতায় ক্ষুব্ধ তিস্তাপাড়বাসী, নদীতে শত শত বিঘা জমি

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীভাঙন রোধে শিগগিরই জিও ব্যাগ ফেলার দাবিতে মানববন্ধন করছেন স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীভাঙন রোধে শিগগিরই জিও ব্যাগ ফেলার দাবিতে মানববন্ধন করছেন স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তাপাড়ের সাতটি ইউনিয়নে ভয়াবহ নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এলাকাগুলো হলো- পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশা চাপানি ও ঝুনাগাছ চাপানি।

বিশেষ করে খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ছোটখাতা গ্রামে তোফেল মেম্বারের বাড়ির পাশ দিয়ে নদীর একটি নতুন শাখা বের হওয়ায় শত শত বিঘা আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে নতুন করে শতাধিক পরিবার গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে তিস্তার ভাঙনে অসংখ্য গ্রাম মানচিত্র থেকে মুছে গেছে। স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা ও খেলার মাঠসহ বহু স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়েছে। তবে এবারের ভাঙনের তীব্রতা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার মিটার নদীপাড় ভেঙে যাচ্ছে, যার ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয়, বাজার ও ঘাটগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ অবস্থায় নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীভাঙন রোধে শিগগিরই জিও ব্যাগ ফেলার দাবিতে মানববন্ধন করছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার (০৮ আগস্ট) দুপুর ১২টায় গয়াবাড়ি ইউনিয়নের তিস্তাপাড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কৃষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

বক্তব্য দেন, তিস্তা নদী সুরক্ষা আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক আব্দুল ওদুদ, টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন, বিএনপি সভাপতি ইয়াসিন আলী, গয়াবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ লিটন, ইউপি সদস্য বাবর আলী, উপজেলা জিয়া পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর খান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ছোটখাতা ২ নম্বর গ্রোইন থেকে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের দীঘিরপাড় রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় ২ থেকে ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ দিয়ে পাড় রক্ষাবাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন। তা না হলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হবে না এবং অচিরেই আরও কয়েকটি গ্রাম নদীতে হারিয়ে যাবে। বিষয়টি প্রশাসন ও ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বহুবার জানানোর পরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমার তিন বিঘা জমি নদীতে চলে গেছে। এবার যদি বাঁধ না দেওয়া হয়, তবে ঘরবাড়ি ও বাকি জমিও থাকবে না।’ গৃহবধূ লায়লা বেগম অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, ‘প্রতিদিন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখি—আমাদের সবকিছু একটু একটু করে নদীতে হারিয়ে যাচ্ছে। কৃষক রজত আলী জানান, ‘অনেক কষ্ট করে ৩ লাখ টাকা দিয়ে দুই বিঘা জমি বন্ধক নিয়েছিলাম; কিন্তু এবারের বন্যায় পুরো ক্ষেতে পলি পড়ে গেছে। এক ছটাক ধানও ঘরে তুলতে পারব না।’

মানববন্ধন শেষে স্থানীয়রা নদীর পাড় ঘুরে দেখান এবং দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আগামী ৫ দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল অধিদপ্তর

আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে আবারও ধাক্কা খেল বাংলাদেশ 

অর্থ আত্মসাৎ : বিএনপি নেত্রী আফরোজার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা অনুমোদন

প্লট দুর্নীতি  / শেখ হাসিনা-জয়-পুতুলের বিরুদ্ধে তিন বাদীর সাক্ষ্য শেষ

গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবক আটক

মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লের প্রধান উপদেষ্টা 

ভারতে ভুয়া পুলিশের অফিসে আসল পুলিশের হানা

আমরা মরলে অর্ধেক দুনিয়া সঙ্গে নিয়ে যাব, যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানি সেনাপ্রধান

ঘরে বসে সহজ পদ্ধতিতে কিডনির পরীক্ষা করতে পারবেন

১০

ভারতে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী আটক

১১

যুবকদের বড় সুখবর দিল সরকার

১২

ফিলিস্তিনিকে স্বীকৃতি / বাড়তি নজর কাড়ছে নিউজিল্যান্ড

১৩

মহাসড়ক বন্ধ করে নবীনবরণ অনুষ্ঠান

১৪

ওয়ানডেতে রোহিত-কোহলির খেলা নিয়ে যা বললেন গাঙ্গুলি

১৫

পল্লবী থানা হেফাজতে জনি হত্যা : দুই পুলিশ কর্মকর্তার যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল

১৬

গানের টিজারেই ঝড় তুললেন হৃতিক আর জুনিয়র এনটিআর

১৭

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস জিনিয়াসে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সাফল্য 

১৮

মিরপুরে পিচ পরিদর্শনে হেমিং, চোখে পড়ল ‘পুঁই বাগান’

১৯

ত্বকের যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ছে

২০
X