ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

এন্টিভেনম নেই হাসপাতালে, সাপের কামড়ে দুই সপ্তাহে ৫ জনের মৃত্যু

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। ছবি : কালবেলা
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। ছবি : কালবেলা

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকা বড় পলাশবাড়ি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের ইসরাইল উদ্দীন। তার ছোট ছেলে ৫ম শ্রেণির ছাত্র সাকিবুল ইসলামকে বিষধর সাপে কামড় দেয়। চিকিৎসার জন্য চার হাসপাতালে গিয়েও পাননি ভ্যাকসিন। পরে দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যায় তার ছেলে।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে তার ছেলেকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। ছেলের মুত্যুর শোকে অসুস্থ মা। দুদিন ধরে চিকিৎসা চলছে তার। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো গ্রামে।

ইসরাইল উদ্দীন জানান, ৪টা হাসপাতালে নিয়ে গেছি। বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতাল থেকে হরিপুর, এরপরে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল। সেখানেও ভ্যাকসিন না পেয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ হাসপাতাল নিয়ে গেলাম রাত তখন ১০টা বাজে। সেখানেও ভ্যাকসিন নেই, দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে আমার ছেলে কোলে মারা গেছে। বাবা হয়ে ছেলেকে বাঁচাতে পারিনি। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়।

জানা গেছে, স্কুলছাত্র সাকিবুলের মতো ঠাকুরগাঁও জেলায় গত দুই সপ্তাহে পীরগঞ্জের ৭ম শ্রেণির স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী, হরিপুরে গৃহবধূ শম্পা রানীসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বিষধর সাপের কামড়ে।

মারা যাওয়ার মানুষদের স্বজনরা বলছেন, জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে সাপের বিষমুক্ত করার ভ্যাকসিন এন্টিভেনম না থাকায় মরতে হচ্ছে এসব রোগীদের।

শম্পা রাণীর স্বামী জিতেন বলেন, সকালে সাপে কামড়ানোর পর হরিপুর, রাণীশংকৈল এবং সবশেষ ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে নিয়ে গেছি। কিন্তু ভ্যাকসিন পায়নি। নিরুপায় হয়ে ওঝার কাছে নিয়ে গেছি। সবশেষ স্ত্রীকে বাচাতে পারিনি। দেড় বছরের একটা ছোট বাচ্চাকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক জানান, বর্ষার সময়ে প্রতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ১০-১৫ জন সাপে কামড়ে মারা যাওয়ার পর হাসপাতালগুলো ভ্যাকসিনের চাহিদা পাঠায়। এরপরে যখন ভ্যাকসিন হাসপাতালে এসে পৌঁছায়, তখন বর্ষা শেষ। স্বাস্থ্য বিভাগের উচিত ইউনিয়ন-উপজেলা ও জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতে বর্ষার আগেই ভ্যাকসিন মজুত রাখার।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, চাহিদা পাঠানোর পরও এন্টিভেনম দেয়নি। পরে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ঔষধাগারেও এন্টিভেনম সংকট। আমরা চেষ্টা করছি নিয়ে আসার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কালিয়াকৈরে ১০ হাজার তালবীজ রোপণের উদ্যোগ

‘মানুষের ধর্মীয় ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা বিধান আমাদের দায়িত্ব’

অর্থের অভাবে সন্তান বিক্রির চেষ্টা, পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক

বীরের বেশে তারেক রহমান প্রত্যাবর্তন করবেন : এনামুল হক

টিকটক করার সময় ট্রেনের ধাক্কা, অতঃপর...

‘দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছেন মেরিনাররা’

প্রধান শিক্ষকের দুই পা ও ডান হাত ভেঙে দিল দুর্বৃত্তরা

ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিনের উঠান বৈঠক

‘সরকারি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করা হবে’

টানা ৮ দিন বন্ধ থাকবে সোনামসজিদ স্থলবন্দর

১০

১৫ বছরের কম বয়সীদের টাইফয়েডের টিকা নিশ্চিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার

১১

লালমনিরহাটের দুর্গাপূজায় র‍্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা

১২

রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিয়ে ঢাকায় সেমিনার

১৩

রাতের আঁধারে বিক্রি হচ্ছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের কারখানার যন্ত্রাংশ

১৪

বিএনপি সব ধর্মের মানুষের পাশে থাকতে বদ্ধপরিকর : নীরব

১৫

বাংলাদেশের ফাইনালের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল পাকিস্তান

১৬

বাসাপ্রতি ১০০ টাকার বেশি বর্জ্য চার্জ নেওয়া যাবে না : ডিএসসিসির প্রশাসক

১৭

গাজীপুরে ঝুট গুদামে ভয়াবহ আগুন

১৮

ছাত্রীদের ‘আপত্তিকর’ প্রস্তাব দেওয়া সেই অধ্যক্ষকে ওএসডি

১৯

যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কোম্পানির ওপর চীনের বড় পদক্ষেপ

২০
X