সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। জানা গেছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলার ডান পাশের সব ধমনি কেটে যায় তার। চাপাতির কোপে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে বুকের বাঁ পাশের পাঁজর। অন্য আরেকটি কোপ পিঠ দিয়ে ঢুকে ফুসফুস ভেদ হয়ে পাঁজরের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে গেছে বুক দিয়ে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গ্রেপ্তার ৭ আসামির দুই দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত শাহজালাল। পরে বিচারক শুনানি শেষে আসামিদের জেলহাজতে পাঠান।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ এন এম আল মামুন বলেন, সাংবাদিক তুহিনের গলা, ঘাড়, বুক, পিঠ ও হাতে গুরুতর ৯টি গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একটির চেয়ে আরেকটি আঘাত কোনোভাবেই ছোট নয়। সব আঘাতই সমান গুরুতর, সব আঘাতই গভীর।
একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য এর যে কোনো একটি আঘাতই যথেষ্ট বলে জানান মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মাজহারুল হক। তিনি বলেন, ৯টি আঘাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গভীর হয়েছে বুকের বাঁ পাশে। টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে বাঁ হাতের হাড়। ময়নাতদন্তের এ প্রতিবেদন এরই মধ্যে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সাংবাদিক তুহিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সংঘবদ্ধ চক্রের অপরাধের ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন তুহিন। এ ঘটনায় আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে, প্রত্যক্ষদর্শীর স্বাক্ষী আছে। সব তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সাজার সংস্কৃতি নিশ্চিত করা গেলে অপরাধ দমন করা যাবে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. রবিউল হাসান জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ৭ আসামিকে শনিবার রাতে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রোববার থেকে তাদের রিমান্ড শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় একটি হানিট্র্যাপ ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গেলে সন্ত্রাসীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্য করুন