সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছেন ১৭ বিয়ে করে দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করা সাবেক বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কবির হোসেন পাটোয়ারী। একই সঙ্গে কবিরের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে থাকা ভিডিও অপসারণের আবেদন করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) তার পক্ষে আইনজীবী জিয়াউর রহমান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন করেন। আগামী সপ্তাহে রিট আবেদনের শুনানি হতে পারে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কবির হোসেন পাটোয়ারির আরেক আইনজীবী ফয়জুল্লাহ ফয়েজ।
এর আগে তদন্তে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ১৭ নারীকে বিয়ের অভিযোগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কবির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। বরিশালের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও হিসেবে পটুয়াখালীর বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ১৬ সেপ্টেম্বর ডিএফও কবিরের বিরুদ্ধে ১৭ নারীকে বিয়ে ও প্রতারণার অভিযোগে বরিশাল মহানগর প্রথম আমলি আদালতে মামলার আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) হাফিজ আহমেদ বাবলু।
বিচারক সাদিক আহম্মেদ আবেদনটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আগামী ২০ নভেম্বর মামলার শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বাবলু।
তিনি বলেন, চাঁদপুরের মতলবের বাসিন্দা কবির একে একে ১৭টি বিয়ে করেছেন। প্রতিটি বিয়েতে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশের ৬ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন। প্রথম বিয়ে গোপন রেখে ধারাবাহিকভাবে একাধিক বিয়ে করে তিনি শুধু আইনই ভঙ্গ করেননি; ধর্মীয় মূল্যবোধ, সমাজব্যবস্থা ও সংস্কৃতির প্রতি চরম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কবির ডিএফও হিসেবে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর বরিশালে যোগদান করেন। এর আগে তিনি খুলনায় কর্মরত ছিলেন। গত ১১ সেপ্টেম্বর নগরীর কাশীপুরে বিভাগীয় বন সংরক্ষকের কার্যালয়ের সামনে তার বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন কয়েকজন নারী ও তাদের স্বজনরা।
নারীরা নিজেদের ওই কর্মকর্তার স্ত্রী দাবি করে অভিযোগ করেন। এরপর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়। একই দিন স্ত্রী দাবি করা নারীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরেজমিন তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। এরপর সাময়িক বরখাস্ত হন কবির হোসেন পাটোয়ারী।
মন্তব্য করুন