মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ফেসবুকে দিয়েছিলেন বিনামূল্যে লাশ পরিবহনের খবর, তিনিই এখন যাত্রী!

সন্দ্বীপের কুমিরা ঘাটে স্পিডবোট থেকে নামানো হচ্ছে প্রবাসীদের লাশ। ছবি : কালবেলা
সন্দ্বীপের কুমিরা ঘাটে স্পিডবোট থেকে নামানো হচ্ছে প্রবাসীদের লাশ। ছবি : কালবেলা

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের অসহায় রোগী ও লাশ পরিবহনের জন্য এক প্রবাসী বিনামূল্যে স্পিডবোট চালু করেছেন। ৮ অক্টোবর ওমানে সড়ক দুর্ঘটনার একদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে এমন খবর পোস্ট দিয়েছিলেন মগধরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে মো. আমিন মাঝি।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনিই হলেন এ সেবার দ্বিতীয় যাত্রী। ওমানে নিহত অপর ছয়জন এই আমিনের অধীনেই কাজ করতেন।

আমিন মাঝির দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। কিছুদিন পর দেশে এসে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করার কথা ছিল তার।

আর টানাটানির সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে ঋণ করে ওমান গিয়েছিলেন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন রনি। বাড়িতে ছোট্ট চায়ের দোকান চালিয়ে সংসার চলত কিছুটা কষ্টে। স্বপ্ন ছিল—প্রবাসের কষ্টার্জিত টাকায় পরিবারকে একটু স্বস্তি দিবেন। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় সেই স্বপ্নপূরণ হলো না।

তিনি আড়াই বছর আগে বিয়ে করেন, দেড় বছর বয়সী এক সন্তান রেখে গেছেন। দুই মাসের ছুটি শেষে মাত্র ১ মাস ২১ দিন আগে ওমানে ফিরে গিয়েছিলেন।

সারিকাইত ইউনিয়নের আরেকজন মো. রকি সাত বছর ধরে ওমানে কাজ করতেন। আরেক নিহত মো. আরজু একই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সিদ্দিক মাঝির বাড়ির বাসিন্দা। পা বর্তী মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের মো. জুয়েল আট মাস আগে বাড়িতে এসেছিলেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া সাত প্রবাসীর মধ্যে ছয়জনই অসচ্ছল। ভাঙা টিনের বাড়িই তাদের সম্বল। এর মধ্যে পাঁচজনেরই চার থেকে ছয় মাস বয়সী সন্তান রয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন কালবেলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় বাঁশবাড়িয়া থেকে মরদেহ স্পিডবোটযোগে সন্দ্বীপে আনা হয়। পরে জানাযা শেষে দাফন করা হয়। জানাজা জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

তিনি বলেন, সাহাবুদ্দীন আর বাবলুর বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। একসঙ্গে বেড়ে ওঠা থেকে প্রবাসে কাজ করা, আর এখন মৃত্যুর পর পাশাপাশি কবরে দাফনও হলো। দুনিয়াতে একসঙ্গে ছিলেন, পরকালেও তেমনই থাকবেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা বিবেচনায় সাতজনের পরিবারের সাতজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানান।

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা কালবেলাকে বলেন, সকালে মরদেহ সন্দ্বীপ এসে পৌঁছায়। পরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করার ও প্রাপ্য তারা সবই পাবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৪ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

দেশে ভূমিকম্প অনুভূত, উৎপত্তিস্থল যেখানে

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প

বিএসএফের গুলিতে নিহত ব্যক্তির লাশ এখনো ফেরত পায়নি পরিবার

শীতের সঙ্গে ভিড় বাড়ছে লেপ-তোশকের দোকানে

যুবকের পচাগলা লাশ উদ্ধার

সুখবর পেলেন যুবদল নেতা

পটকা ফুটানো নিয়ে রাতে সংঘর্ষে জড়াল দুই মহল্লার বাসিন্দারা

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ যা জানা গেল

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আল-আমিনের সর্বশেষ অবস্থা

১০

বিজয়ের মাস উদযাপনে ঢাবি প্রশাসনের উদাসীনতার অভিযোগ জাতীয় ছাত্রশক্তির

১১

গুজবে কান না দিয়ে খালেদা জিয়ার সুস্থতায় দোয়া করুন : ইশরাক

১২

শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মনি গ্রেপ্তার

১৩

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফরিদপুরে কর্মসূচি

১৪

এখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৫

রাবির তিন শিক্ষক বরখাস্ত, ছাত্রত্ব বাতিল দুই শিক্ষার্থীর

১৬

‘চশমা’ প্রতীকে নির্বাচন করবে আট দলের শরিক জাগপা

১৭

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়া সব সময় আপসহীন : মাসুদুজ্জামান

১৮

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ওমরাহ পালন

১৯

সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ভারতকে, সমতায় সিরিজ

২০
X