

‘দূষণমুক্ত পরিবেশ, বাইসাইকেলেই দেখব দেশ’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাইসাইকেল নিয়ে ৬৪ জেলা ঘুরতে বেরিয়েছেন মৌলভীবাজারের তরুণ রুহিত দত্ত।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে তিনি ২২তম জেলা হিসেবে বগুড়া শহরে পৌঁছেছেন। জয়পুরহাট থেকে তিনি বগুড়ায় পৌঁছান। বিকেলে বগুড়া থেকে তিনি নওগাঁয় যান। নওগাঁ রাতযাপন শেষে সোমবার তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হবে। রোহিত দত্ত বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পার্কে এসে পৌঁছলে বগুড়া জেলা সিপিবির সভাপতি আমিনুল ফরিদসহ উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর স্থানীয় নেতারা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া উদীচীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুস সোবহান মিন্নু, সিপিবি ধুনট উপজেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহা সন্তোষ, বগুড়া উদীচীর সাধারণ সম্পাদক শাহীদুর রহমান বিপ্লব, বগুড়া বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষে এটিএম রাশেদ রহমান ও বগুড়া উদীচীর কোষাধ্যক্ষ আহসান হাবীব।
আলাপকালে সাইকেল আরোহী রুহিত দত্ত জানালেন, মৌলভীবাজার শহরের লক্ষ্মীকোলা এলাকার ব্যবসায়ী তপন কান্তি দত্ত ও রীনা রানী দত্তের দ্বিতীয় ছেলে তিনি। বড়ভাই তন্ময় দত্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় চুয়েটে অধ্যয়নরত। রুহিত এবার শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সে মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির সদস্য।
দেশের সব জেলায় ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছা অনেক দিনের। যদিও টাকা আর সময়ের অভাবে এই শখ পূরণ করতে সাহস পাননি তিনি। পরবর্তীতে বাবার দেওয়া টাকা নিয়েই নেমে পড়েন সব জেলা ঘুরে দেখার এই মিশনে।
গত ৮ অক্টোবরে প্রথম জেলা সিলেট থেকে শুরু হয় সাইকেল নিয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণ। এরপর সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা, শেরপুর হয়ে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রামে প্রবেশ করেন। পরে তিনি পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, জয়পুরহাট হয়ে ২২তম জেলা বগুড়া আসেন। দেশের ৬৩ জেলা ভ্রমণ শেষে তিনি মৌলভীবাজারে গিয়ে শেষ করবেন তার বাইসাইকেল ভ্রমণ।
এই ভ্রমণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি বার্তা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। সেটি হচ্ছে, ‘সাইক্লিং করি বায়ুদূষণ রোধ করি’। এই তরুণ মনে করেন, নাগরিকেরা মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত মোটরযান ছেড়ে বাইসাইকেলে অভ্যস্ত হলে বায়ুদূষণ অনেকাংশে কমে আসবে। সড়ক দুর্ঘটনাও কম হবে।
রুহিত দত্ত বলেন, আমাদের দেশ এত সুন্দর, এত প্রাকৃতিক শিক্ষণীয় বিষয় আছে আমাদের সব জেলাগুলোতে তা পুরোপুরি না ঘুরলে বুঝতেই পারতাম না। প্রতিটি জেলার মানুষ আমার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। আপ্যায়ন করেছে। একটি কথা সবাই স্বীকার করতে বাধ্য যে, আমাদের দেশের মানুষ খুবই অতিথিপরায়ণ।
সাইকেলযোগে ভ্রমণ বিষয়ে তিনি বলেন, সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছি এর কারণ খুব কাছ থেকে নিজে সব জেলা ঘুরে দেখার চেষ্টা করেছি। সেই সঙ্গে যেন জেলাবাসীরা আমার দিকে আগ্রহী হয় সেই চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ কর্মসূচি শুরুর পর পথে পথে মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। অনেকেই নানা পরামর্শও দিয়েছেন। জোর করে খাবার দিয়েছেন। দেশের মানুষরা যে এত ভালো এ কর্মসূচি না নিলে হয়ত জানাই হতো না।
মন্তব্য করুন