

একটি লাশবাহী গাড়ি বাড়ির সামনে থেমে আছে। গাড়ির ভেতরে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আবুল কালাম। গাড়ির গ্লাসের পাশে তাকিয়ে আছে তার দুই ছোট্ট সন্তান—আব্দুল্লাহ (৫) ও পারিসা (৩)।
ছোট্ট শিশু দুটি মাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলতে থাকে,‘মা তুমি কান্না করো না, বাবা ঘুমোচ্ছে।’
কিন্তু মা প্রিয়া অনবরত কান্না ও আহাজারিতে ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমার সন্তানরা এখনো বুঝতে পারেনি, তাদের বাবা আর ফিরবে না। ওরা বলে, ‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করো না।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাই যে, ওদের বাবা আর কখনো জাগবে না! আবুল কালামই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা, এখন আমি ও সন্তানরা একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছি।
এর আগে রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রো দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালামের মরদেহ ভোর রাতে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ইশ্বরকাঠি গ্রামে আকাশ-বাতাসে তখন শুধু স্বজনদের আর্তনাদ আর শোকাবহ পরিবেশ। কালামের আকস্মিক মৃত্যু পরিবার ও পুরো এলাকাবাসীকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। সকাল ৯টায় স্থানীয় মাদ্রাসা মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর নড়িয়া কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
নিহতের চাচাত ভাই নোমান চৌকিদার বলেন,আবুল কালাম খুবই সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। আমাদের সবার সঙ্গে খুব সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতেন। ওর স্ত্রী ও সন্তানসহ পরিবারের জন্য সরকার কিছু করবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন, আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা তার জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। আমরা সার্বক্ষণিক তার পরিবারের পাশে আছি এবং পরিবারের লোকজন যে কোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা পাবেন।
মন্তব্য করুন