

বগুড়ার শাজাহানপুরে মা ও দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেছেন নিহতের মা রাবেয়া সুলতানা।
মামলায় নিহত সাদিয়ার স্বামী সেনাসদস্য শাহাদাত হোসেন কাজলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ হেফাজতে থাকা সেনাসদস্য শাহাদাত হোসেন কাজলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় নিহত সাদিয়ার মা রাবেয়া সুলতানা অভিযোগ করেন, তিন বছর ধরে মেয়ের ওপর চরম নির্যাতন চালাচ্ছিল শাহাদাত। জমি বিক্রি করে টাকা আনা এবং মোটরসাইকেল কেনার জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। এসব নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঘটনার আগের দিন বিকেলেও শাহাদাত ফোন করে টাকা দাবি করেন এবং সাদিয়াকে মারধর করার কথা জানান।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে ২৫ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে যে কোনো সময় শাহাদাত ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই শিশুর গলা কেটে এবং সাদিয়ার গলায় চাপ দিয়ে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করা হয়।
পরিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত লাশ এবং বিছানার পাশে রক্তবিহীন একটি বঁটি দেখতে পায়, যা তাদের কাছে ‘পরিকল্পিত হত্যার আলামত’ বলে মনে হয়েছে।
অন্যদিকে শাহাদাতের মা দাবি করেন, সাদিয়া মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল এবং আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। তাদের দাবি, সাদিয়া দুই সন্তানকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেছে। তবে পরিবার এ বক্তব্য মানতে রাজি নয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা দরজা ভেঙে তিনজনের মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, রাবেয়া সুলতানার দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্বামী শাহাদাত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে রাখা হয়েছিল। মামলা দায়েরের পর সেনাসদস্যকে আসামি দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে আনা হবে। তখন জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছু পরিষ্কার হবে।
গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার খলিশাকান্দি গ্রামে নিজ ঘর থেকে সাদিয়ার গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত এবং তার দুই শিশু সন্তান সাহিফা ও সাইদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরপরই সেনাসদস্য স্বামী শাহাদাত হোসেন কাজলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। সে ময়মনসিংহ সেনানিবাসে কর্মরত ছিল, কয়েকদিন আগে ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিল।
মন্তব্য করুন