

এলসি খোলার খবরেই বগুড়ায় পেঁয়াজের বাজারে দর পতন হয়েছে। কেজি প্রতি দাম কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। গত দুই দিন আগেও পেঁয়াজের বাজারে যে অস্বাভাবিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল, এখন তার ঠিক উল্টো চিত্র। ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্যের জন্য নতুন করে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার খবরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে বড় ধরনের পতন ঘটেছে।
মাত্র একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা, তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সাধারণ ক্রেতারা।
শনিবারও (০৬ ডিসেম্বর) বগুড়ার বাজারে যে পেঁয়াজ ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, রোববার (৭ ডিসেম্বর) তা নেমে এসেছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়।
বগুড়া শহরের রাজাবাজার ও ফতেহ আলী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে, যা খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। অন্যদিকে, পুরাতন পেঁয়াজ পাইকারিতে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা এবং খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে।
দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ও সরবরাহ ঘাটতির কারণে বগুড়ার বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল লাগামছাড়া। প্রতিদিন প্রায় ৫ টন পেঁয়াজের চাহিদা থাকলেও দামের অস্বাভাবিকতা কিছুতেই কাটছিল না। নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হলেও দর কমছিল না—সেই অস্থিরতা যেন এক লহমায় কমে গেল এলসি খোলার খবরে।
রাজাবাজারের আড়তদার পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, সরবরাহ ক্রমেই বাড়ছে। সামনে দাম আরও কমবে। এলসি এলে পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হতে পারে। তবে হঠাৎ করেই এলসি খোলায় বগুড়ার বাজারে দাম অনেকটা কমে এসেছে। অনেকে লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
তিনি আরও জানান, আগামীকাল সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) হয়তো আরও কমতে পারে সেই ভয়ে আজ বাজারে দাম কমেছে। তবে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, যেহেতু নতুন দেশি পেঁয়াজ কিছুদিন পরেই বাজারে স্বাভাবিকভাবে প্রচুর পাওয়া যাবে, তার ঠিক আগে এভাবে এলসি খোলায় তাদের বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
অন্যদিকে, বাজারে দাম কমে আসায় ক্রেতাদের মাঝে দেখা দিয়েছে স্বস্তির ছাপ। বাজারে এ মূল্য কমা আগামী দিনগুলোতে আরও সাশ্রয়ী হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা।
বগুড়া ফতেহ আলী বাজারে বাজার করতে আসা চাকরিজীবী আল আমিন সাকিদার বলেন, এলসি খোলার খবরেই বগুড়ার বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে দাম কমেছে। তাতে মনে হচ্ছে এটি একটি সিন্ডিকেটের কারসাজি ছিল। তা না হলে একদিনে কেজিতে ৩০ টাকা কমে কীভাবে।
এলসি খোলা ও বাজারে সরবরাহ বাড়ার আশায় যেখানে ক্রেতাদের মুখে স্বস্তি, সেখানে ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে রয়েছেন স্থিতিশীল ও লোকসানমুক্ত বাজারের দিকে। বগুড়ার পেঁয়াজের বাজারে এ অপ্রত্যাশিত মূল্যপতন সামনের দিনগুলোতে একটি সহনীয় পরিস্থিতি নিয়ে আসবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন