

মুন্সীগঞ্জের আলোচিত ও ধর্মপরায়ণ ১৩১ বছর বয়সী বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম মারা গেছেন। দীর্ঘ ১৩০ বছর বয়স অতিক্রম করেও নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রমজানের সবকটি রোজা পালন করায় তিনি দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন। তার ধর্মনিষ্ঠ জীবনযাপন এলাকাবাসীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য ছিল অনুপ্রেরণার উৎস।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পানহাটা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমা সুফিয়া বেগমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে, গত বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার পানহাটা গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানা গেছে, ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের কারণে বিভিন্ন জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেল তার জীবনকথা নিয়ে সংবাদ ও বিশেষ প্রতিবেদন প্রচার করে। পাশাপাশি তার ধর্মীয় অনুশীলন ও দীর্ঘায়ুর স্বীকৃতি হিসেবে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এদিকে, ১৩০ বয়সেও তিনি করেছেন হাঁটা-চলা। খাওয়া-দাওয়াত ছিলো না কোনো সমস্যা। পবিত্র মাহে রমজানে রেখেছে সব কয়টি রোজা। পাল্লা দিয়ে পড়েছেন অন্যান্য নামাজের সঙ্গে তারাবিও। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের পানহাটা গ্রামের মৃত আল তাজউদ্দিন তালুকদারের স্ত্রী সুফিয়া বেগমের কথা।
স্বামী আল তাজউদ্দিন তালুকদার মারা গেছেন প্রায় ৫৭ বছর আগে। আছে দুই ছেলে, একজনের বয়স ৯০। আট মেয়ের মধ্যে জীবিত আছে পাঁচজন। মেয়ে ও জামাইসহ ছয়জন চলে গেছেন পরপারে। এছাড়া রয়েছে পাঁচ প্রজন্মের দেড় শতাধিক উত্তরসূরি।
প্রতিদিন সেহেরীর সময় ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সকলকে ডেকে তুলতেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত নামাজ পড়ার তাগিদ দিতেন। সেই কিশোরী বয়স থেকেই নিয়মিত নামাজ ও রোজা পালন করেন তিনি। রমজান মাসেও নিয়মিত পড়েন তারাবিও। জাতীয় পরিচয় পত্রে ১১৩ বছর হলো প্রকৃতপক্ষে তার বয়স ১৩১। অথচ এখনো ধরে রেখেছেন ইসলামের অনুশাসন।
এদিকে ছোট একটি টিনের ঘরে বসতি ছিলো তার। বাড়ির উঠান জুড়ে থাকেন ছেলে-স্বজনরা। পাঁচ প্রজন্মের দেড় শতাধিক নাতি-নাতনী ও স্বজনদের শ্রদ্ধেয় ভালোবাসায় শেষ দিনগুলো পার করেছেন সুফিয়া বেগম।
মন্তব্য করুন