

সাভার উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সাভার মডেল থানার সামনে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকারি দপ্তরে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব। অথচ সেই দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো এবং পরে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত।
তারা আরও বলেন, সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ও সমাজের দর্পণ। সত্য প্রকাশ ঠেকাতেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের মামলা দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা অবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং বলেন, সাংবাদিক নির্যাতনের এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরা হয়।
মানববন্ধন থেকে সাংবাদিক নেতারা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেন। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় বক্তব্য দেন সাভার প্রেস ক্লাবের সাবেক সহসভাপতি ও জিটিভির সাভার প্রতিনিধি আজিম উদ্দিন, সাভার উপজেলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এসএ টিভির সাভার প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন, টেলিভিশন রিপোর্টার্স ক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক ও এখন টিভির সাভার প্রতিনিধি হুমায়ুন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক ও গ্লোবাল টিভির তোফায়েল হোসেন তোফাসানি, ধামরাই প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল হোসেন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত হোসেন সৌকত, ধামরাই রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি আদনান হোসেন, আশুলিয়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী মানু, সাভার প্রেস ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক লোটন আচার্য্যসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিকরা।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সাভার মডেল থানার সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক গণমাধ্যম কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ ডিসেম্বর সাভারের আলমনগর এলাকায় উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে যান দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি দেওয়ান ইমন, বিজয় টিভির শরীফ শেখ, চ্যানেল এস-এর প্রতিবেদক জাহিদুল ইসলাম ও এনটিভির ক্যামেরাম্যান জায়েদ আনসারীসহ কয়েকজন সাংবাদিক। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার এএসএম শাহীন, পেশকার শফিক ও সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের পেশাগত কাজে বাধা দেন এবং তাদের ওপর হামলা চালান। পরে ওই সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেই সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন।
মন্তব্য করুন